
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি,৩৬টি ককটেল এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার।
রবিবার (১১মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃত হলেন—মাসুদ রানা চৌকিদার (৩৮), শাকিল (২১), মামুন (৪০), মো. রাব্বি (২৬), মো. আসাদ মিয়া (৪৫), মো. পলাশ শেখ (৩৭) এবং আনোয়ার হেসেন (৪৪)।
মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় স্বর্ণের দোকানে একাধিক ডাকাতির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চক্রকে ধরতে তৎপর হয় ডিবি। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার আনোয়ার হোসেন এবং বরিশাল জেলার পলাশের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দল কোনো একটি স্বর্ণের দোকান ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর পায় ডিবি।
এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একটি আভিযানিক দল গতকাল শনিবার রাতে যাত্রাবাড়ী থানাধীন দনিয়া কলেজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে একটি ৭.৬২ এমএম বিদেশী পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলিসহ মাসুদ রানা চৌকিদারকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে, মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ডাকাতি পরিকল্পনার বিষয়টি স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্য মতে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে এ ঘটনায় ব্যবহারের উদেশ্যে প্রস্তুতকৃত ৩৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকগুলো ইতোমধ্যে বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট কর্তৃক নিষ্ক্রিয় করে।
নাসিরুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় ডাকাতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যান্য সহযোগীরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান হতে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজের সামনে একত্রিত হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন বৌলতলী বাজারের নিউ ডলি জুয়েলার্সে ডাকাতি সংঘটিত করবে। পরবর্তীতে চক্রের অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ডিবির আভিযানিক দলটি মাসুদ চৌকিদারকে নিয়ে দনিয়া কলেজের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে একটি প্রাইভেট কার ও একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস যোগে ডাকাত দলের সদস্যরা উপস্থিত হয়। আভিযানিক দল তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে শাকিল, মামুন, মো. রাব্বি, মো. আসাদ মিয়া নামের চারজনকে গ্রেফতার করে এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি গাড়ি জব্দ করে। পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে ডাকাতি ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মো. পলাশ শেখ এবং আনোয়ার হেসেন ধোলাইপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট সাতজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতার ডাকাতদের বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নাসিরুল ইসলাম জানান, জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এখন পর্যন্ত ডিবি ৮৭ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে, যার ফলে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় ডাকাতির ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
ডিআই/এসকে