
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর গুলিবর্ষণকারী সাবেক যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর চারতলা ও পাঁচতলা বিশিষ্ট দুটি বাসভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে উত্তেজিত জনতা। এসময় জেলা শহরের তমিজ মার্কেট থাকা বাড়ির ছাদে ও নীচে বাজার সড়কের উপর আগুন ধরিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টার দিকে ভাঙা শুরু হয়, ভাঙন কার্যক্রম এখনো চলছে। বিকেল থেকে শত শত জনতা হাতুড়ি-শাবাল নিয়ে বাড়িটির বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গতে শুরু করে। সন্ধ্যার পর বাড়িটি ভাঙার জন্য ভেক্যু মেশিন নিয়ে আসা হয়।
গতরাতে রাজধানী ধানমন্ডির শেখ মুজিবের ৩২ নম্বর বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই উত্তেজিত জনতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাড়ির ভাঙার প্রস্তুতি নেয়।সালাহউদ্দিন টিপু জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এছাড়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তিনি। তার বাবা লক্ষ্মীপুরের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত আবু তাহের। সালাহউদ্দিন টিপুর বাড়ির পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হোসেন লোটাস ও মাহমুদুন নবী সোহেলের বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে এদের বাড়ির অবস্থান।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে সাবেক যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এ বাড়ির ছাদ থেকে গুলি করা হয়৷ এদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে চার শিক্ষার্থী নিহত ও প্রায় তিন শতাধিক লোকজন আহত হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা ওইদিনই বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা আগুন নিযন্ত্রণে এনে ওই বাড়ির ছাদ থেকে ২৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেলে পুনরায় আগুন ধরিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। ওইদিনই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, সাবেক পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হোসেন লোটাস ও মাহমুদুন নবী সোহেলের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।