ঢাকা, রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
নওগাঁ সুলতানপুর মধ্য পাড়া বায়তুর রহমান জামে মসজিদে ওয়াজ মাহফিল
ভূমিকম্প মোকাবিলায় বিশেষায়িত টিম গঠন-প্রশিক্ষণ
বোদা উপজেলা বিএনপির কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব : সভাপতি মান্নান, সম্পাদক আসাদ
বিরামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
নান্দাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র মতবিনিময় সভা
যাত্রবাড়ী ও শাহবাগে ঝটিকা মিছিল:যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গ্রেফতার ৫
ভূরুঙ্গামারীতে ডাল ফসল উৎপাদনে সফলতা, কৃষকদের মুখে হাসি
রাজাপুরে সবজির আড়ালে গাঁজা চাষ, গাঁজাসহ দুইজন আটক
উলিপুরে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের আহবায়ক কমিটির পরিচিত, সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিদায়, সদ্য যোগদানকৃত সহ- শিক্ষকের সংবর্ধনা
মোহাম্মদপুরে সাড়াশি অভিযান, গ্রেফতার ৭
পাঁচবিবিতে ধরঞ্জী ইউনিয়ন যুব বিভাগের উদ্যোগে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
আলীকদম সেনাজোন কর্তৃক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাসিক আর্থিক অনুদান বিতরণ
পাংশায় দেশীয় পাইপগানসহ তাজা কার্তুজ উদ্ধার
শরীয়তপুরে ২৩ কোটি টাকা মূ্ল্যের অবৈধ জাল জব্দ

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স:)এর জীবনী

মানব সমাজে যখন চরম বিশৃঙ্খলা, কুসংস্কার ও সসমাজের সর্বক্ষেত্রে দেখা দেয় অবক্ষয়, অজ্ঞানতার অন্ধকারে মানুষ হয়ে ওঠে দিশেহারা তখনই পথহারা মানুষদের পথের দিশা দিতে পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের।তার আদর্শে বিভ্রান্ত মানুষকে দেখায় মুক্তির পথ সত্য ও ন্যায়ের আলোকে উদ্ভাসিত হয় পৃথিবী। মধ্যযুগের সেই বর্বরোচিত সময়ে আলোর পথ উন্মোচন করেছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স)। তার আবির্ভাবে জাতি হয়েছে কুসংস্কার মুক্ত,হতাশা মুক্ত এবং মানব জাতি পেয়েছে মুক্তির সন্ধান।

জন্ম,বংশ পরিচয় ও বাল্যকাল :
আরব দেশের মক্কা নগরীতে ৫৭০ খ্রীস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল বিখ্যাত কুরাইশ বংশে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মের পূর্বেই পিতা আব্দুল্লাহ মারা যান এবং বছর বয়সে মাতা আমিনাকে হারান।পিতামাতা হারা এতিম মুহাম্মদ (স)কে দাদা আব্দুল মোতালেব লালন পালন করেন।কিছু কাল পরে তার মৃত্যু হলে চাচা আবু তালেব তাকে লালন পালন করেন। চাচা আবু তালেবের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল ছিল না।চাচাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করতেন। মুহাম্মদ (স)পাহাড়ে মেষ চরাতেন। চাচার সাথে ব্যবসা উপলক্ষে তিনি বিদেশ যেতেন।চাচার জন্য তিনি নানাবিধ জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি শৈশব কাল থেকেই সত্যবাদী ও চরিত্রবান ছিলেন এজন্য সকলে তাকে আল আমীন বা বিশ্বাসী বলে ডাকতেন।

বিবাহ ও নবুওত প্রাপ্তি :

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স) এর বিশ্বস্ততা ও চরিত্র মাধুর্যের কথা ততকালীন আরবের এক ধনবান মহিলা খাদিজার কর্ণগোচর হলে তিনি তাকে স্বীয় ব্যবসায়ের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করেন।অবশেষে মুহাম্মদ (স)এর কর্মদক্ষতা ও চরিত্রগুণে তিনি মুগ্ধ হন।পঁচিশ বছর বয়সে তিনি সদগুণ শালিনী খাদিজা (রা)কে বিবাহ করেন।বিবাহের পর তিনি আল্লাহর আরও সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য হেরা গুহায় ধ্যান করতে লাগলেন। এই মহামনব অবশেষে ৬১০ খ্রীস্টাব্দে চল্লিশ বছর বয়সে আল্লাহর ওহী বা নবুয়ত প্রাপ্ত হন। এই ঐশীবাণীর সমষ্টির নামি ‘আল কুরআন ‘যা মুসলিম জাতির জীবন বিধান এবং সমস্ত সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে সেরা মহাবিজ্ঞ।

আরবের সমাজ ব্যবস্থা :
হযরত মুহাম্মদ (স)এর জন্মের পূর্বে আরব সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব, সংঘাত, হিংসা, বিদ্বেষ এসবই ছিল তাদের মূলনীতি। তখনকার সমাজ ব্যবস্থায় ধনীরা ব্যাপক বিলাসিতায় জীবন কাটাত।তারা দরিদ্র ও অসহায় নারীদের উপর বর্বর নির্যাতন চালাত।বহু বিবাহ, মদ্যপান, কন্যা শিশু হত্যা,রাহাজানি, লুটপাটের মত জঘন্যতম কাজ তখন অহরহ ঘটত।সমাজে ক্রীতদাস প্রথা প্রচলিত ছিল। নানারকম মূর্তি পূজার প্রচলন ছিল।তিনি এসব কুসংস্কার ও অমানবিক নির্যাতনের জন্য ব্যথিত হতেন।তিনি এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পনা করতেন।

ধর্মপ্রচার ও হিজরত :
নবুয়ত প্রাপ্ত হওয়ার পর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স)আরবের মানুষকে সৎপথে আসার আহবান জানান। ইসলামের আদর্শে মানুষকে জীবন পরিচালনা করার আহবান জানান। ইসলামের মূলমন্ত্র হল’আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।’।সৎ কর্ম ও সৎ চিন্তা অনুশীলন দ্বারাই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও বেহেশত লাভ করা যায়।তিনি সর্বসাধারণের মধ্যে ধর্ম প্রচার করতে গিয়ে বহু বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হননি। কারণ আল্লাহর প্রদত্ত ধর্মের বিজয় সম্বন্ধে তার অন্তরে মিল অগাধ বিশ্বাস।

হিজরত ও মক্কা বিজয় :
সুদীর্ঘ ১৩ বছর কাল তিনি মক্কায় ধর্ম প্রচার করতে ব্যর্থ হলে অত্যাচারীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ৬২২ খ্রীস্টাব্দে আল্লাহর নির্দেশে মদিনায় হিজরত করেন।তখন হতে হিজরি সাল গণণা আরম্ভ হয়।মদীনা বাসীরা তাকে সাদরে গ্রহণ করেন এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন।সেখানে তিনি একটা মসজিদ নির্মাণ করেন যে মসজিদটি আজ বিখ্যাত ‘মসজিদুননব্বী ‘ নামে খ্যাত।এ সময় তাকে মক্কার কাফিরদের সাথে কয়েকটি যুদ্ধ করতে হয়।অবশেষে তিনি হিজরতের পর অষ্টম বছরে মক্কা বিজয় করেন।

চরিত্র :
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স)মানব জাতির আদর্শ স্বরুপ। তিনি মানবজাতির সঠিক নির্দেশক। তিনি ছিলেন মিষ্টভাষী, সুদর্শন, অমায়িক, সত্যবাদী একজন মানবীয় গুনাবলী আদর্শ সমাজ সংস্কারক,যোগ্যসেনাপতি,রাজনৈতিক নেতা,সুদক্ষ পরিচালক এবং সর্বশ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক।

ইন্তেকাল :তিনি ২৩ বছর ধর্ম প্রচার করে ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রীস্টাব্দে ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার মদিনায় ইন্তেকাল করেন।

পরিশেষে
হযরত মুহাম্মদ (স)বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নবী।কর্তব্যনিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা, ন্যায়পরায়ণতা, ক্ষমা,সহিংসতা প্রভৃতি মহৎ গুণাবলী তার জীবনকে মাধুর্য্যমন্ডিত করেছিল।”দি হানড্রেডস” গ্রন্থের সাথে সুর মিলিয়ে বলা যায় –পৃথিবীর সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হযরত মুহাম্মদ (স)–ই আমাদের প্রিয় শ্রেষ্ঠ মানব।মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)এর মহান গুণগুলো আমাদের জীবনে প্রতিফলিত করতে পারলেই আমাদের জীবন সুন্দর ও সার্থক হবে।

শেয়ার করুনঃ