
তাঁতের খট খট শব্দে এক সময় মুখরিত থাকতো তাঁতপল্লীগুলো। কিন্তু দফায় দফায় তাঁত কাপড়ের কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচ তুলতে পারছে না প্রান্তিক তাঁতিরা।
বাজারে সুতা-রঙসহ সংশ্লিষ্ট পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও আধুনিকতার যুগে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অব্যাহত লোকসানে দুর্দিন নেমে এসেছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা তাঁতপল্লি পরিবারের লোকদের। টিকতে না পেরে অনেকে ছেড়ে দিয়েছেন এই পেশা। কাজের অভাবে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন তাঁতপল্লি পরিবাররা।
কাকিনা গ্রামে দুই শতাধিক তাঁতি ছিল। বর্তমানে সেই সংখ্যা নেমেছে হাতে গোনা কয়েকটিতে। কিছু কিছু ঘরে চরকা চললেও লোকসানের ভারে টিকতে না পেরে বেশির ভাগই বন্ধ হয়ে গেছে। বাজারে সুতা-রঙসহ সংশ্লিষ্ট পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচার বাড়নো হলে এই শিল্প তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে আশা করছেন পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা।
তারা বলছেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া ও সেই অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন কাকিনার তাঁতশিল্পীরা। একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাঁতের কাজ। অনেকেই এ পেশা ছেড়েছেন। কেউ কেউ বাপ-দাদার পেশা বলে এখনো এ পেশাকে আগলে রেখেছেন।
তাঁতি আমজাদ হোসেন বলেন, মূলধন জোগান ও পণ্য বিপনণের ব্যবস্থা করা গেলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে এই শিল্প । এতে ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাড়তি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রশাসন। কাকিনার তাঁতশিল্পের মন্দা ঠেকাতে মূলধন সহায়তা প্রশিক্ষণ ও বাজারজাতকরণের সুবিধার দাবি জানিয়েছেন তাঁতি পরিবারগুলো।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুকান্ত সরকার বলেন, ‘তাঁতশিল্প আমাদের একটা অন্যতম ঐতিহ্য। এখানকার তাঁতিরা তাদের দক্ষতার মধ্য দিয়ে সুন্দর সুন্দর তাঁতপণ্য তৈরি করে আসছেন। ‘সমাজসেবা অফিস থেকে তাঁতিদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি কোনো প্রতিবন্ধী থাকলে তাদের ভাতার আওতায় আনা হবে।