
সাইদ সাজু, তানোর থেকেঃ রাজশাহীর তানোরে পরীক্ষার মাধ্যমে গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ পরীক্ষার প্রকৃয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। নিয়োগ পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন আবেদনকারীরা। তবে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বলছেন, কোথাও দৌড়ঝাপ করে নিয়মের বাইরে কোন ব্যাক্তিকে গভীর নলকুপ অপারেটর নিয়োগ দেয়া হবে না। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষনায় কৃষকদের মাঝে যেমন স্বস্তি ফিরেছে, তেমনি দুর হয়েছে শঙ্কা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পাল্টে গেছে দেশের অনেক কিছুই, তেমনি পাল্টে যায় বরেন্দ্রের গভীর নলকূপে চিত্র। রাতারাতি তানোর উপজেলার গভীর নলকুপ গুলোতে শুরু হয়, দখলবাজী ও নলকুপ ঘরে তালামারা। কোথাও কোথাও একেকটি নলকূপে ৫ থেকে ৬ টি পর্যন্ত তালা পড়ে। কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। ফলে, চলতি মৌসুমে আলু চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তা ও শংকিত হয়ে পড়েন কৃষকরা।
শৃংখলা ফেরাতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার মাধ্যমে গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেন। ফলে, কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরতে শুরু করে এবং কৃষকরা আলুর রোপন শুরু করেন। এরই মাঝে আবারো থমকে যাই নিয়োগ প্রকৃয়া। কৃষকদের মধ্য আবারো শংকর সৃষ্টি হয়। তবে, সকল জটিলতা কাটিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মৌখিক পরীক্ষার জন্য আবেদনকারীদের পত্র দিতে শুরু করেছেন।
চলতি মাসের ১৯ ডিসেম্বর, ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ ডিসেম্বর এই তিন দিনে তানোর উপজেলার সকল গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগের জন্য মৌখিক পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে নোটিশ জারি করেছেন। ফলে, কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। তবে কে হচ্ছেন অপারেটর তা নিয়েও কৃষকদের মাঝে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। এদিকে আবেদনকারীরা নেতাদের কাছে শুরু করেছেন দৌড়ঝাপ।
তবে, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে, এখানে কোন তদবির গুরুত্ব পাবে না। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর জোনের আওতায় গভীর নলকূপ রয়েছে ৫শ ৩৬টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন রয়েছে ১৬টি। তানোর উপজেলায় সেচের আওতায় মোট জমির ২২হাজার ৩শ’ ৩২ হেক্টর। এইসব জমিতে আলু চাষের পাশাপাশি রুপা আমন ও বোরো চাষ করেন কৃষকরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর থেকে ফর্ম বিতরণ শুরুর তারিখ ঘোষণা করে অক্টোবর মাসের শেষের দিকে অপারেটর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ঝিমিয়ে পড়া বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তানোর জন্য কৃষকদের পদার্পণ ছিল লক্ষণীয়। ফর্ম জমার শেষের দিন পর্যন্ত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর জনে ভীড় করেন কৃষকরা। একেকটি গভীর নলকূপের অপারেটর পদে একাধিক আবেদন পড়ে।
তানোর উপজেলার সুশীল সমাজ বলছেন, তানোরের প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরণদশীল। তারা বলছেন, অপারেটর নিয়োগ যাকেই দেওয়া হোক না কেন গভীর নলকূপ গুলো যেন সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত করা হয় তাহলে কৃষকদের খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি শৃঙ্খলা বদ্ধ থাকবে। বিগত দিনের মতো যেন কোন অপারেটর একক মালিকানা দাবি করে ইচ্ছেমতো সেচ চার্জ নিতে না পারে সেদিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি ও হস্তক্ষে থাকতে হবে।
আবেদন করা একাধিক নিয়োগ প্রত্যাশী বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী যদি গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ দিয়ে গভীর নলকূপ পরিচালিত করা হয় তবে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে অপরদিকে কৃষকরা স্বল্প খরচে চাষাবাদ করতে পারবেন। তবে অনেক অপারেটর নিয়োগ প্রত্যাশীরা নিজের নামে নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় শীর্ষ পর্যায়ের দৌড়ঝাপ করছেন বলো জানান একাধিক নিয়ে প্রত্যাশী।
এবিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী বলেন, তানোরে ৫শ’ ৩৬টি গভীর নলকূপের অপারেটর পদে ১ হাজার টাকা করে ১হাজার ৫শ’ ৯৬টি আবেদন বিক্রয় করা হয়। তিনি বলেন, আবেদন জমা পড়ে ১হাজার ৫শ’ ৩০টি। মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে যোগ্য ব্যাক্তিদের নিয়োগ দিয়ে শৃংখলতার ও কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী গভীর নলকূপ গুলো পরিচালিত করা হবে বলেও জানান তিনি।