
নালিতাবাড়ী সীমান্তে ধানক্ষেতের পাশে দেওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে সেখানেই হাতিটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকেই গারো পাহাড়ের হাতিগুলো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্র ও শনিবার রাতে ৫০-৫৫টি হাতি পাহাড় থেকে নেমে ওই স্থান ঘিরে অবস্থান করে। হাতির হাঁক-ডাকে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আশপাশের ধানক্ষেত নষ্ট করেছে হাতির পাল।
রোববার বিকেলে হাতির পালটি ফের পাহাড় থেকে নেমে আসে মধুটিলা ইকোপার্কের বুরুঙ্গা-কালাপানি বাতকুচি সড়কে। অবস্থান করে প্রায় তিন ঘণ্টা। হৈ-হুল্লোড় চিৎকার করেও হাতিগুলোকে সরাতে পারেনি এলাকাবাসী। এ সময় একজন সড়কে হাতির পাল দেখে ভয়ে মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। এতে ওই সড়কে যাতায়াত বন্ধ থাকে। সন্ধ্যার দিকে নিজের থেকেই পাহাড়ের জঙ্গলে চলে যায় হাতির পাল।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, বন্য হাতির পাল সীমান্ত সড়কের কালাপানি এলাকায় ঝোপঝাড়ে অবস্থান করছে। আর ২৫-৩০টি হাতি সড়কে দাঁড়িয়ে আছে। হাতিগুলোকে তাড়াতে অথবা দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে ঢিল, কারও হাতে বাঁশি। সমস্বরে হইচই করছে কিন্তু হাতিগুলো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। কখনও ক্ষোভে তেড়ে আসছে। আবার থেমে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ৫০-৫৫টি হাতি নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের বুরুঙ্গা-কালাপানি পাহাড়ে অবস্থান করছে। যখন-তখন খাদ্য ও পানির খোঁজে হাতিগুলো নেমে আসছে লোকালয়ে। গত এক সপ্তাহে হাতির পালের অব্যাহত তাণ্ডবে বাতকুচির পার্শ্ববর্তী খলচান্দা কোচপাড়া গ্রামের জুপতি কোচনীর ২৫ কাঠা, নয়ন কোচের ১০ কাঠা, পজিশন কোচের ৫ কাঠা, জিনমনি কোচনীর ১ একর, দুর্জয় কোচের ১ একর, কানাই কোচের ১০ কাঠা, ত্রিপল কোচের ১৮ কাঠা, বকুল কোচের ১ একর সুর্নিমল কোচের ১ একর ও সুকুমার কোচের ১ একর জমির আমন ধান তছনছ করেছে।
বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৩১ অক্টোবর বিদ্যুৎযুক্ত তারে জড়িয়ে একটি হাতির মৃত্যু হলে নালিতাবাড়ী থানায় ১১ জনের নামে একটি মামলা করা হয়। এক আসামি কারাগারে।