
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রাশেদ আলমের নেতৃত্বে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে।
সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার দেউটি ইউনিয়নের কাজির খিল গ্রামের কাতার প্রবাসী তারেক হোসেন রনির বাড়িতে এই হামলা,ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কাতার প্রবাসী তারেক হোসেন রনি অভিযোগ করে বলেন,দেউটি ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের লোকমান হোসেন ওরপে হুক্কা চোরার ছেলে রাশেদ আলম আমার সঙ্গে কাতার প্রবাসী ছিলেন। রাশেদ আলম প্রবাসী থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দেউটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেয়। সেই সময়ে ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে রাশেদের সঙ্গে আমার মনমালিন্য হয়। পরবর্তীতে সেখানে আমাদের কয়েকজন সহপাঠির মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা হয়ে যায়।
তিনি বলেন,সাম্প্রতিক আমি কাতার থেকে দেশে ছুটিতে আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েকদিনের মাথায় রাশেদ দেশে চলে আসেন। গত কয়েকদিন যাবৎ রাশেদ পূর্বের ঘটনার জন্য আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। আমি তার চাহিত চাঁদা না দেওয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় রাশেদ, তার ভাই মানিকসহ ১৫-২০ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসীদল নিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় লোকজন তাদের বাঁধা দিলে তারা প্রকাশ্যে ফাকাগুলি ছুড়ে আমাকে ব্যাপক মারধর করে আমার বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করে চলে যায়।
তারেক হোসেন রনি আরো বলেন,পরবর্তীতে রাত আড়াইটার দিকে ছাত্রদল নেতা রাশেদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আবারো আমার বাড়িতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঢুকে। এসময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আমরা বাড়ি থেকে সরে গেলে সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসীরা ঘরের দুটি দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর ও তান্ডব চালায়। এসময় তারা ঘরের ভিতরের আলমারী ভেঙ্গে নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও সাড়ে ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী রনি ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন,ঘটনার পর সোনাইমুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানা-পুলিশ মামলার এজাহার গ্রহণ করেনি।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,হাসিনা সরকার পতনের পর এখনো কোন নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় নাই। তার পরও বিএনপির নাম বিক্রি করে রাশেদসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসীগ্রুপ মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না পেলে তারা মানুষের জান-মালের ক্ষতি করছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত তিন দফায় ছাত্রদলের রাশেদ ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে প্রবাসী রনির বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করে তাকে প্রাণে হত্যার জন্য খুঁজে বেড়ায়। পরবর্তীতে রনি এবং রনির পরিবারের সদস্যদের না পেয়ে তাদেরকে হত্যার হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা চলে যায়।
সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন,ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীদের থানায় অভিযোগ দিতে বলে। তবে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডিআই/এসকে