
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের চন্দনধূল এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর দেরটার দিকে চাঁদা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে ৪ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে ।
এ ঘটনায় ব্যবসায়ী বাদী হয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতে দায়ের করা মামলা সুত্রে জানা যায় , উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের চন্দনধূল গ্রামের মৃত শেখ বছির উদ্দিন এর পুত্র মোঃ লাল মিয়া (৬২) এর কাছে উপজেলার চন্দনধুল গ্রামের ইউসুফ মীর এর পুত্র ১নং বিবাদী রাসেল মীর (৩২) , মৃত- নীলকান্ত দে এর পুত্র ২নং বিবাদী রতন দে (৫৫) , উপজেলার ইছাপুরা গ্রামের মৃত- মাহা শেখের ছেলে ৩ নং বিবাদী ফারুক শেখ (৫৫), সামছুল শেখ এর পুত্র ৪ নং বিবাদী বাবু (৩২) , বিবাদী গং বাদীর কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সাথে অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জন ছিলো ।বিবাদী গং চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও ভূমি দস্যু প্রকৃতির লোক বটে। বিবাদীগন এলাকায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকের কাছে থেকে চাঁদা দাবী করিয়া বেড়ায়। বিবাদী খারাপ প্রকৃতির হওয়ায় বিবাদীদের উক্ত কাজে কেউ প্রতিবাদ করিতে ও সাক্ষী দিতে পারে না। ঘটনার কিছুদিন পূর্বে বিবাদীগন আমার বাড়ীতে আসিয়া আমাকে বলে তোর ছেলেরা বিদেশ থাকে এবং তুই ব্যবসা করিয়া ভালো টাকা পয়সা কামাই করছস ।
এখানে বসবাস করিতে হইলে আমাদের ২লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলিয়া জানায়। আমি বিবাদীদের বলি আমি চাঁদার কোন টাকা পয়সা দিতে পারিব না। একথা বলার সাথে সাথে বিবাদীগণ বলে আমরা যেকোন দিন আসিবো চাঁদার টাকা রেডি রাখিতে বলিয়া চলিয়া যায়। তৎপর ঘটনার দিন তারিখ ও সময়ে অর্থাৎ বিগত ৬/৮/২০২৪ ইং তারিখে দুপুর ১.৩০ মিনিটের সময় বিবাদীগন পরস্পর যোগাযোগে, দুরভীসন্ধি মূলে, একই উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে লাঠি, লোহার রড, সাবল, ছুরি, বটি, কাঠের ডাসা নিয়া আমার বাড়ীতে আসিয়া আমাকে আমার বসত বিল্ডিংয়ের সাথে পশ্চিম পাশের রাস্তায় আমাকে পাইয়া আমাকে ঘেরাও করিয়া ১নং বিবাদী আমার গলায় ছুড়ি ধরিয়া বলে তোকে চাঁদার ২লক্ষ টাকা রেডি রাখতে বলিয়াছিলাম। এক্ষুনি আমাদের চাঁদার ২লক্ষ টাকা দে। আমি বিবাদীদের চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করিলে ৩নং বিবাদী হুকুম দিয়া বলে চাঁদার টাকা না দিলে ওর বাড়ী ঘর ভাংচুর করিয়া ওকে খুণ করিয়া ফালা এই হুকুম পাইয়া ৪নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার পেটে নাভির উপরে পার মারিয়া কাটা রক্তাক্ত জখম করে এবং সমস্ত বিবাদীগন আমার বসত বাড়ীর পূর্ব ভিটির বিল্ডিং এর নীচতলার আমার বিল্ডিংলের ওয়াল সহ ৭টি জানালার ১৪টি থাইগ্লাস, ১২টি সিসি ক্যামেরা, ০১টি সিঙ্গার এসি, ১টি গাজী পানির টাংকি, ১টি ফ্রিজ, ১টি আকাশ টিভির ডিস ভাংচুর করিয়া আনুমানিক ৩,০০,০০০/- (তিনলক্ষ) টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং আমার বসত বিল্ডিংয়ের আলমারীর ভিতরে থাকা নগদগ ৫০,০০০/- টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণালংকার এবং বিল্ডিংয়ে থাকা ১টি বাইসাইকেল ১টি Oppo মোবাইল, ১টি স্যামসাং মোবাইল, সিসি ক্যামেরার সেটাপ বক্স, ১টি রাউটার, যাহার সর্বমোট মূল্য ৬০০০০০/- (ছয়লক্ষ) টাকা এবং মূল্যবান দলিলপত্র নিয়া যায়। আমি ও ২-৪নং সাক্ষী বাধা দিলে বিবাদীগণ আমাকে ও ২-৪নং সাক্ষীকে কিল ঘুষি ও লোহার রড দিয়া বাইরাইয়া নীলা ফুলা জখম করে। ২নং বিবাদী হত্যা করার উদ্দেশ্যে ২নং স্বাক্ষীকে মাথা লক্ষ্য করিয়া ইট নিক্ষেপ করিলে ইটের কোনা লাগিয়া ২নং স্বাক্ষীর মাথার তালুতে কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।৩নং স্বাক্ষী প্রানের ভয়ে পাশের রাজনের বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিলে বিবাদীগন ৩নং স্বাক্ষীর মাথার চুল কাটিয়া দেয় এবং কানে ধরিয়া উঠ বস করায়। আমাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন যাওয়ার সময় এই বলিয়া হুমকি দিয়া যায় যে, লোকজন আসাতে চাঁদার টাকা নিতে পারিলাম না সময় ও সুযোগমত পাইলে খুন করিয়া হইলেও চাঁদার টাকা নিবে এবং যদি এই ব্যাপারে কোন মামলা করি বা বিচার চাই তাহলে আসামীগণ আমাদের খুন করিফা ফালাইবে।
আমার ও আমার স্ত্রী ২নং সাক্ষীর অবস্থা খারাপ থাকায় আমরা সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা করিয়া এবং ৩-৪নং সাক্ষীদের স্থানীয় ফার্মেসী হইতে ঔষধ আনিয়া চিকিৎসা করাইয়া এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট বিচার চাহিলে বিবাদীগন দেবিচার না মানায় আমি ও ৩নং স্বাক্ষী থানায় মামলা করিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করিতে সামান্য বিলম্ব হয় ।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি তাকে ।