
গলাচিপা উপজেলার পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি আহসান হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক ফোরকান খলিফা। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন চালক ও মালিকেরা।গলাচিপা পৌর শহরের কলেজপাড়া, কালিকাপুর, পশুহাসপাতাল স্ট্যান্ড, সাব রেজিষ্টার অফিস স্ট্যান্ড, কাজী মসজিদ স্ট্যান্ড, খেয়াঘাট, লঞ্চঘাট চৌরাস্তা মার্কেটের সামনে থেকে প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন স্থানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করে। এসব স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন নামে দৈনিক চাঁদা তোলা হত। আ.লীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রভাবশালী নেতারা এসব চাঁদাবাজির নেতৃত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন তারা। রোববার সকাল ৯ টার বিভিন্ন স্ট্যান্ডগুলোতে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেন গলাচিপা পৌরসভার শ্রমিক দলের সভাপতি আহসান হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক ফোরকান খলিফা
দীর্ঘ দিন ধরে এসব সড়কে বিভিন্ন স্থানে আ.লীগের নেতাকর্মীরা প্রভাব বিস্তার করে তৃণমূল পর্যায় থেকে উপজেলা পর্যন্ত চাঁদা উত্তোলন করে আসছিলেন। এর মাঝে গণমাধ্যম ও প্রশাসনের তৎপরতায় সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও স্ট্যান্ডগুলোতে চেইন চাঁদা উত্তোলন করা হত।জানা গেছে, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ও রেজিস্ট্রেশনকৃত গাড়ির জন্য আলাদা আলাদা চাঁদা পুলিশকে দিতে হত। এছাড়া যেকোন সমিতিতে নতুন গাড়ি ভর্তি করানোর জন্য এক হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হত মালিকদের।এসব নিয়ে কয়েকজন চালক ও মালিকের সঙ্গে কথা হয়। তবে নিরাপত্তার অভাবে তারা নাম প্রকাশ করতে চাননি।চালকেরা জানান, অটোরিকশা সড়কে বের করলেই প্রতিদিন তাদের চেইন চাঁদাসহ ৫০ থেকে ৮০ টাকা সড়কে খরচ হয়। কিন্তু লাখ লাখ টাকা চাঁদা উঠলেও কোনদিন মালিক সমিতি চালক বা মালিকদের কল্যাণে এক টাকাও ব্যয় করতে দেখা যায়নি।
মালিকেরা বলছেন, তারা অনেক কষ্টে বিভিন্নভাবে জমানো টাকা দিয়ে বা ঋণ নিয়ে অটোরিকশা কিনেন। কিন্তু তা সড়কে নামাতে গিয়ে সমিতিতে ভর্তি, দৈনিক চেইন চাঁদা, এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় গেলে বাড়তি চাঁদা দিতে হয়। এতে তাদের অনেক খরচ হয়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তাদের গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করলেও তাদের শান্তনা ও চোখের জল ছাড়া কিছুই মেলে না। তবে এখন স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি না হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে তাদের মধ্যে।এখন থেকে স্ট্যান্ডসহ সড়কের চাঁদাবাজি চিরতরে বন্ধ হবে-এমনই প্রত্যাশা যাত্রীদেরও।যাত্রী পশুহাসপাতাল স্ট্যান্ড এলাকার সহিদ বলেন, ‘সড়কে যারা চাঁদা তুলতো তারা এখন জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত। আমার বিশ্বাস চাঁদাবাজি না থাকলে সামনে ভাড়া কমবে। চাঁদাবাজির টাকা কিন্তু আমাদের পকেট থেকেই যায়, মালিকেরা নিজের পকেট থেকে দেয় না।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, কেউ যদি পৌসভার কোনো স্ট্যান্ডসহ সড়কে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।