
নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামুর গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়ায় গত ৪ দিনে টানা ভারী বর্ষণে ও উজন থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ধ্বসে পড়েছে নাইক্ষ্যছড়ি ১১ বিজিবি সংলগ্ন বেইলী ব্রীজ। এতে সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী, দোছড়ি ইউনিয়ন ও রামু উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষ মানুষ। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন,নাইক্ষ্যংছড়ি খালের বেইলী ব্রীজ টি ভারী বর্ষণে ধ্বসে পড়ায় নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার সাথে ৪ ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে, পাহাড় ধ্বসে প্রাণ হানি না ঘটলেও শতাধিক কাঁচা বাড়ি ঘরের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ২ শতাধিক পরিবার। স্থান ভেদে দেখা মিলেছে পাহাড় ধ্স। বিশেষ করে, বুধবার (৩১ জুলাই) অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতির মুখে পড়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মানুষ। এছাড়াও পাশ্ববর্তী রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া-গর্জনিয়ায় ঐতিহাসিক শাহ্ সুজা সড়কে ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ। তাই সেখানে মানুষ চলাচল করছে নৌকা যোগে।সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঘুমধুম ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমকূল, ক্যাম্প পাড়া, ঘোনার পাড়া, হিন্দু পাড়া, বাজার পাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কোনার পাড়া, মধ্যম পাড়ায় পাহাড় ধ্বসে আহত হয়েছে। রামুর কচ্ছপিয়ার তুলাতলী গ্রামের নুরুল হাকিমের স্ত্রীসহ দুই জন। এসব এলাকার মানুষের জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি সংকটসহ প্রয়োজনীয় খাবার ব্যবস্থা। এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পাহাড় ধ্বসের সাথে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়াতে এবং রাস্তার উপরে ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ার ফলে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড় ধ্বসে সর্বোচ্চ ঝুকিতে রয়েছে তুমব্রু পশ্চিমকূল গলাছিড়া নামক স্থানের পাহাড়ের উপর বসবাসরত নুরুল কবির, গোরামিয়া, বাজার পাড়ার ফরিদ আলমসহ ৫-৬টি পরিবার।নুরুল কবির বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে পাহাড়ের একটি অংশ ধ্বসে রাস্তার উপরে পড়ে এবং ২য় ধাপে বাড়ির বারান্দা বরাবরই সকালের দিকে পাহাড় ধ্বসে পড়াতে খুব বেশি আতঙ্কে দিন কাটছে।
দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদুল হক বলেন, রাস্তার দুই পাশে যদি টেকসই গাইডওয়াল দেওয়া হয় পরবর্তী বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাচঁতে পারে আতঙ্কিত পরিবারগুলো।এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একে জাহাঙ্গীর আজিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া, রাস্তা, দোকান প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি অনেক স্থানে পাহাড় ধ্বসে রাস্থাঘাটে যানচলাচল বন্ধ হয়ে আছে।উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান,এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে ব্রীজ টি পূর্ণ সংস্কারের আবেদন করা হয়েছে। আর পাহাড়ে বসবাসরত সকলকে সতর্ক করা হয়েছে পাহাড় ধ্বস ও পানিবন্দি স্থানগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আপাতত শুকনো খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সহায় তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।