
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ৩২ বছর ইমামতি শেষে রাজকীয়ভাবে ইমামকে বিদায় দিয়েছেন এলাকার মুসল্লিরা।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে আশুগঞ্জ উপজেলার বড়তল্লা পশ্চিম পাড়া বাইতুল আকসা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান উরফে আবুল কাসেম কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মসজিদ কমিটি সহ মুসল্লি ও এলাকাবাসী।বিদায় অনুষ্ঠান ঘিরে আয়োজকরা একটি মাইক্রোবাসে ফুল দিয়ে সুসজ্জিত করেন।
পরে মুসল্লিরা ইমাম হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান উরফে আবুল কাসেম কে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। সেই সাথে পুরস্কার স্বরুপ নগদ ১ লাখ ১২ হাজার টাকা হাতে তুলে দিয়ে অনন্ন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ।
শেষে অবসরে যাওয়া ঈমামকে ফুলের সমারোহে সুসজ্জিত একটি মাইক্রোবাসে বসিয়ে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে রাজকীয় সম্মানে পৌঁছে দেন ঈমামের নিজ বাড়িতে।এমন বিদায়ী সংবর্ধনা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান উরফে আবুল কাসেম। তিনি বলেন, জীবনের দীর্ঘসময় যাদের ইমামতি করেছি তাদের এমন আয়োজনে আমি খুবই মুগ্ধ হয়েছি। এ জন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি। আমিও দোয়া করবো সবাইকে মহান আল্লাহপাক যেন ভালো রাখেন।
জানা যায়, মাওলানা মিজানুর রহমান বড়তল্লা পশ্চিম পাড়া বাইতুল আকসা জামে মসজিদে টানা ৩২ বছর ইমামতি করেন। দীর্ঘদিন ইমামতি শেষে বার্ধক্যজনিত কারণে অবসর নিয়েছেন। অবসরে যাওয়ায় এলাকাবাসী ও মসজিদের মুসল্লিরা বিশেষ সম্মান জানিয়ে দিলেন ঈমামকে রাজকীয় বিদায় জানািয়ে শেষ সম্মান জানালেন।
বিদায়ের সময় ঈমাম সাহেব এলাকাবাসী ও মসজিদের মুসল্লিগণকে আল্লাহর কাছে হাওলা করে দিয়ে গেলেন। ঐ সময় ঈমাম সাহেব কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি কাঁদলেন এবং মুসল্লিগণকে ও কাঁদালেন।এলাকাবাসী ও মসজিদের মুসল্লিগণ বলেন, হুজুর মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি এলাকার সন্তানদের ইসলাম শিক্ষা দিয়েছেন। হুজুর চলে যাওয়ায় আমরা সবাই কষ্ট পাচ্ছি। হুজুরকে এক নজর দেখতে এলাকার নারী-পুরুষ রাস্তার পাশে হাজির হন। বিদায়ী সংবর্ধনা উপলক্ষে মসজিদ প্রঙ্গনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানীর সভাপতিত্বে ও মির্জা আব্বাস আহম্মেদ সফিউল্লাহ মেম্বার এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠনে উপস্থিত ছিলেন,হামদু মিয়া,মুফতি আরমান হুসাইন সাইফি,মুছা মিয়া,দেলোয়ার হোসেন,মোঃ জসিম উদ্দিন,সালাহ উদ্দিন সরকার, সাইফুল ইসলাম দুলাল মিয়া,শাহিন মিয়া,আল আমিন,শেখ লতিফ,শেখ সাদেক মিয়া,শেখ স্বপন,শেখ সফর আলী,শেখ জাকির,হেলাল মিয়া,এনামুল হক,হাজী দুলাল মিয়া,মোঃ আলম মিয়া,জাকির মিয়া,হাজী হেলু মিয়া,ইদন মিয়া,মোঃ শামিম মিয়া,শেখ আমির খান সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিগণ বলেন, বিদায় মানেই বেদনার। আজকের দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। কেননা আমরা আমাদের আত্মার আত্মীয়কে বিদায় দিচ্ছি, যিনি দীর্ঘ ৩২ বছর আমাদের দ্বিনি শিক্ষায় আলোকিত করেছেন। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ।