ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স:)এর জীবনী
ভারতে পাচারের শিকার ৬ বাংলাদেশি নারীকে ৫ বছর পর দেশে ফেরত
বাগমারা ইজরাইল বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে পণ্য বর্জনের আহ্বান
নড়াইলের হাসিম মোল্যা হত্যা মামলার ৮ আসামি গ্রেফতার
রূপগঞ্জে পূর্বাচল টিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
আত্রাইয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
২৩ বছর পর পবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের ‘মুক্তমঞ্চ’ “সংস্কৃতি চর্চায় খুলছে নতুন দিগন্ত”
বাড্ডা থানা যুবলীগের আহবায়ক গলাকাটা কাউসার গ্রেফতার
ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা,কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও রেশন পরিবহন ব্যবস্থার প্রবর্তন করলো আনসার
বসুন্ধরায় নারীর মরদেহ উদ্ধারে গিয়ে দুই মণ গাঁজা পেল পুলিশ
এবার মোহাম্মদপুর থানার মামলায় গ্রেফতার প্রতারক সিকদার লিটন
পহেলা বৈশাখের পরে মিরপুরে ফুটপাত ও সড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করতে অভিযান করা হবে: ডিএনসিসি প্রশাসক
সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান
ডালিয়ার ১৪ বিয়ে: প্রতারণা চলমান
কালিগঞ্জ পিএফজি’র সম্মিলিত কার্যক্রম অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা সভা 

লাইনে গেলে ভোগান্তি কমে নড়াইল পাসপোর্ট অফিসে

নড়াইলে লাইনে গেলে সহজেই পাসপোর্ট মেলে নড়াইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। আর নিজেরা আবেদন করে জমা দিতে গেলে পোহাতে হয় ভোগান্তি এমনটাই বলছেন সেবাপ্রার্থী ও অফিসের আশেপাশের কম্পিউটার দোকানদাররা। আর এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন অফিসের কর্মকর্তারা। তবে নিজেরা আবেদন করেই ভোগান্তি ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ। বছরের শুরুতেই নড়াইল শহরের নতুন বাস টার্মিনালের ওপর পাশে নান্দনিক নতুন ভবনে সেবা প্রদান শুরু করে নড়াইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। সম্প্রতি অফিসের আনসার থেকে শুরু করে কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিদিন তাদের কাছে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গড়ে ৭০-৮০ জন সেবাপ্রত্যাশি সেবা নিতে আসছেন। সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কি না তা জানতে পরিচয় গোপন রেখে সরজমিন যেয়ে দেখা যায়, নতুন অফিসের পাশেই গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি কম্পিউটারের দোকান। সেখানে ভিড় করছেন মানুষেরা। কেউ নতুন পাসপোর্টের আবেদন করছে, কেউ পুরাতন পাসপোর্টের হালনাগাদ করছেন, আবার কেউ ভুল সংশোধনের আবেদনের জন্য এসেছেন। পরিচয় গোপন রেখে অফিসের সামনে ভিসা প্রসেস নামে একটি কম্পিউটারের দোকানে নতুন পাসপোর্ট করতে খরচের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই দোকানদার মো: ইবন খান বলেন, পাসপোর্ট কি সৎভাবে করবেন নাকি অসৎভাবে। লাইন দুইডাই আছে। সৎভাবে করলে নিজে নিজে করতে হবে। আর অসৎভাবে করলে আমরা করে দিব। অসৎভাবে করলে কোন জটিলতা পোহাতে হবে না। সৎভাবে ৫ বছরের পাসপোর্টে লাগবে ৪০২৫ টাকা আর ১০ বছরের জন্য লাগবে ৫৭৫০ টাকা। তবে পোহাতে হবে ভোগান্তি। অফিসে গেলে কাগজপত্র জমা নিবে না। হেডম দেখাতে পারলে জমা নিবে। আর অসৎভাবে করলে ৫ বছরের জন্য লাগবে ৬ হাজার টাকা, ১০ বছরের জন্য লাগবে ৭৫০০-৮০০০ টাকা। এতে নেই কোন চিন্তা। সবকিছুই করে দিবেন তিনি। কাগজপত্রে দেয়া থাকবে সাংকেতিক চিহ্ন। পাসপোর্ট অফিসে জমা দিলেই সাংকেতিক চিহ্ন দেখলে ভোগান্তি ছাড়া কাজ সম্পন্ন হবে।
এরপর কম্পিউটার দোকানদারকে প্রশ্ন করা হয় অতিরিক্ত এতো টাকা কোথায় কোথায় দিবেন তিনি। প্রশ্নের জবাবে মেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দোকারদার বলেন, অতিরিক্ত যে টাকা নিবেন তার থেকে ১১০০ টাকা দেন পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্টদের বাকি টাকা রাখেন তিনি। দোকান থেকে বের হয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় শহরের অলিতে-গলিতে থাকা আরও অনেক দোকানেই এমন কাজ হয়ে থাকে। পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা কয়েকেজন সেবা প্রত্যাশীদের সাথে কথা হলে তারা তুলে ধরেন তাদের হয়রানির কথা। নতুন পাসপোর্ট তৈরির অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই যুবক বলেন, তারা এসেছেন জেলার কালিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রাম থেকে। নিজেরা নতুন পাসপোর্টের আবেদন করে কাগজপত্র জমা দিতে প্রথমদিন এসে ফিরে গেছেন তারা। ছোট একটি ভুল দেখিয়ে তাদের কাগজপত্র জমা নেয় নি পাসপোর্ট অফিস। আজ দ্বিতীয় দিন প্রত্যন্ত সেই এলাকা থেকে সময় ও অর্থ ব্যয় করে ফের এসেছেন কাগজপত্র জমা দিতে। তাদের দাবি, আজ তাদের কাগজপত্র যেভাবে জমা নিয়েছে, আগেরদিন একইভাবে জমা নিতে পারত। তাহলে তাদের হয়রানি হতে হতো না। তাই ভোগান্তি এড়াতে চাইলে বেশি টাকা লাগলেও কম্পিউটারের দোকান থেকেই করা ভালো।এসময় কথা হয় পাসপোর্ট নিতে আসা সদর উপজেলার আরেক তরুণের সাথে। তিনি জানান, অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কম্পিউটারের দোকান থেকে পাসপোর্ট আবেদনের কাজ করিয়েছেন, আবেদন জমা দিতে এসে কোন সমস্যা হয় নি। আজ তিনি পাসপোর্ট নিতে এসেছেন। কিন্তু তাকে পাসপোর্ট দেয়নি, বলছে পরের কর্ম দিবসে যেতে। কেন দেবেন না তার কোন কারণ বলেননি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তিনি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে কথা হয় নড়াইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক মো: জাহাঙ্গীর আলমের সাথে। তিনি বলেন, সাধারণ জনগণ আবেদন করতে কম্পিউটার দোকানে যান সেখানে তারা বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে অতিরিক্ত অর্থ নেন। কিন্তু এর সাথে পাসপোর্ট অফিসের কোন সম্পর্ক নেই। আর পাসপোর্ট অফিস জন্মলগ্ন থেকে যেভাবে হয়ে আসতেছে আমি সেটা কমাইতে পারি, নির্মূল করা আমার দ্বারা সম্ভব না। আমি এখানে এসেছি একমাস তিনদিন। আমি চেষ্টা করেছি মানুষকে সেবা দেয়ার। আমার নির্দেশ দেয়া আছে, আমার অফিসে সেবা নিতে এসে কেউ সেবা না নিয়ে চলে যায় এরকমটা যাতে না হয়। কোন সমস্যা হলে আমার কাছে পাঠাবে, আমি দেখব। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, সবাই বলে পাসপোর্ট অফিসে ভালো সার্ভিস পাচ্ছে। কোন অভিযোগ থাকলে উন্নয়ন সমন্বয়ক মিটিংয়ে ওই অফিসকে সে ব্যাপারে বলে দেয়া হয়। সামনে মিটিংয়ে বিষয়টি তিনি দেখবেন।

শেয়ার করুনঃ