
ডেস্ক রিপোর্ট : পাবনার চাটমোহর রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতা শরিফুল ইসলামসহ ৬ জনকে আটক করেছে র্যাব। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাটমোহর রেলস্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু টিকিট, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলো- শরিফুল ইসলাম (৩৮), জাহিদুল ইসলাম (৩৪) ও আরিফুল ইসলাম (৩২), আব্দুল জলিল (৪৫), আনিসুর রহমান (২৮), হাবিবুর রহমান (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, চাটমোহর রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল একটি চক্র। অভিযোগের ভিত্তিতে বিকেলে অভিযান চালিয়ে টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতা শরিফুল ইসলামসহ উল্লেখিত ৬ জনকে আটক করা হয। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় বিভিন্ন ট্রেনের ৩৬টি টিকিট, ৭টি মোবাইল ফোন ও টিকিট বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, চাটমোহর রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা শরিফুলের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন যাবত চাটমোহর স্টেশন থেকে রাজশাহী-ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস ও ধুমকেতু এক্সপ্রেস এবং খুলনা-ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস, দিনাজপুর-ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিলেন। এ ঘটনায় আটককৃতদের মামলা দায়ের করে চাটমোহর থানায় সোপর্দ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র্যাব।
যেভাবে টিকিট কালোবাজারি করতো তারা:
আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানায়, আটক শরিফুলের নেতৃত্বে তার সহযোগিরা প্রথমত ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশেপাশের এলাকার টোকাই, রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরদেরকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। এইক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে ৪টি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেয়া হতো। এছাড়াও কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকেট বুকিং কর্মচারীদের দিয়ে বিভিন্ন সাধারণ যাত্রীদের টিকিট কাটার সময় প্রদেয় এনআইডি সংগ্রহ করে রাখতো এবং পরবর্তীতে সেগুলো ব্যবহার করে সংরক্ষণকৃত প্রতিটি এনআইডি দ্বারা ৪টি করে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতো। এভাবে তারা প্রতিদিন প্রায় শতাধিক টিকিট সংগ্রহ করতো। এ ছাড়া ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে আটককৃতরা তাদের কাছে সংরক্ষিত এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে, এমনকি সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতো। আর আটককৃত আরিফুল, আনিছুর, জলিল, জাহিদুল ও হাবিবদের প্রধান কাজ ছিলো অনলাইন টিকিট প্রত্যাশীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে দর কষাকষি করে অনলাইন টিকিটগুলো অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করা।
সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১২, সিপিসি-২ পাবনার কোম্পানী কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান এসব তথ্য জানান।