
র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা সারাদেশে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছি। আগামীকাল র্যাবের ৭০০ টহল দল কাজ করবে।
শনিবার রাজধানীর মিরপুরে নির্বাচন উপলক্ষে র্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমি কিছু ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখেছি সব কিছুই প্রস্তুত রয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ভোট মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার। প্রতি পাঁচ বছরে মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়।
আগামীকাল মানুষ যেনো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা সারাদেশে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছি। আগামীকাল র্যাবের ৭০০ টহল দল কাজ করবে। আমাদের গোয়েন্দারা ও সাইবার টিম কাজ করবে। ডগ স্কয়াড, বোম ডিসপোজাল ইউনিট এবং বিশেষ প্রয়োজনে র্যাবের হেলিকপ্টার থাকবে। এর বাইরে আমাদের একটি নতুন ডিভাইস আছে যার নাম ওআইভিএস। এই ডিভাইস দিয়ে এলাকার বাইরে বহিরাগতরা আসলে শনাক্ত করা হবে।
দেশের বিভিন্ন জেলায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। তাতে একটা বিষয় নিশ্চিত হয়েছি আমাদের দারুণ একটি সমন্বয় রয়েছে। সবাইএক সঙ্গে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করা হবে।
আপনারা জানেন কিছু দল নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। ভোট দিতে কেউ বাধা দিলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের আগে যেমন নাশকতা আমরা দেখেছি তার তুলনায় আমাদের দেশ কিছুই হয় নি। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের তুলনায় দেশের পরিস্থিতি অনেক ভালো।
গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে র্যাব প্রধান বলেন, সাংবাদিকরা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে নাগরিক হিসেবে, গনতান্ত্রিক মধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের সহযোগিতা করবেন। পাশাপাশি আপনাদের মাধ্যমে সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
গতকাল ট্রেনে বড় নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। আজ বিএনপির হরতাল চলছে, এমন পরিস্থিতিতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে যাবে। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাশকতার গোয়েন্দা তথ্য ছিলো।
এ ধরনের নাশকতা হতে পারে। ভোট বয়কট করেছে বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপি। ইতোমধ্যে আমরা গতকাল রাতে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ পেট্রোল বোমা ও ককটেল পাওয়া গেছে। কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা জড়িতদের ধরতে কাজ করি। তবে এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। কারণ এখনো আমরা তদন্ত করছি। তথ্য পেলে জানাবো। আর সাধারণ মানুষের ভীতির বিষয়টা নিয়ে এমন কোনো হুমকি বা আশংকা তৈরি হয় নি। যে ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে পারবে না।র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সারাদেশে কাজ করছে। মানুষ নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসতে পারবে। আমরা নির্বাচন ঘিরে তিনটি স্তরে কাজ করেছি। প্রথমে নির্বাচনের আগে যেটা আজ থেকে শেষ। আগামীকাল নির্বাচনের যারা ভোট কেন্দ্রে আসবে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া। ভোট দিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারে। ভোট কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দেওয়া।
এছাড়া ভোট পরবর্তী সময়ে পরাজিত প্রার্থীরা অনেক সময় ঝামেলা করেন, সংঘর্ষ হয়। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে।
ওআইভিএস ব্যবহারের কারণ এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় যেতে কোনো বাধা আছে কি না জানতে চাইলে র্যাব প্রধান বলেন, এটা শুধু কেন্দ্রের সামনে ব্যবহার করা হবে। যাতে অন্য এলাকার ভোটার আরেক কেন্দ্রে আসতে না পারে তাদের চিহ্নিত করতে এই ওআইভিএস ব্যবহার করা হবে।
নাশকতাকারীরা যেনো প্রবেশ করতে না পারে। আর নির্বাচনে যৌক্তিক কারণ ছাড়া এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাবেন না।
নাশকতার তথ্য থাকা পরেও ট্রেনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে গোয়েন্দাদের কোনো দূর্বলতা আছে কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, ২০১৪ সালে যে নাশকতা হয়েছে। সেই হিসেবে এ বছর ৩০ ভাগ নাশকতা নেই। তথ্য ছিলো কিন্তু কোথায় নাশকতা হবে এটা চিহ্নিত করা কঠিন। তবে আমাদের নজরদারি ছিলো। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা কাজ করছি।
ডিআই/এসকে