
রাজধানীর শেরে বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিচয় দিয়ে এক যুবককে অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের মুখে নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে ৯ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেন শাহ আলী থানার দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) তুহিন কাজী ও মশিউর রহমান তাপস।
৯ ডিসেম্বর এই সন্ধ্যায় একটি নীল রঙের প্রাইভেটকার গাড়ি দিয়ে তিনজন মিলে এই অপহরণ করেন। এই ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় অজ্ঞাত তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নম্বর-২৯।
মামলায় ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ৯ ডিসেম্বর বিকেলে ৩টার দিকে শেরে বাংলা নগর থানা এলাকায় শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কিন্তু তাকে না পেয়ে রিকশায় করে পান্থপথের বাসায় ফিরে যাওয়ার সময় শেরে বাংলা নগর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ভবনের সামনে নীল রঙের একটি প্রাইভেটকার এসে ভুক্তভোগীর রিকশার গতিরোধ করে। গাড়ি থেকে তিন জন অজ্ঞাতনামা নেমে নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। এই সময়ে পকেটে থাকা ১৬ হাজার টাকা দামের মোবাইল, ১ লাখ ৭০ টাকা নিয়ে নেয়। এরপর গাড়িতে তুলে কালো কাপড় দিয়ে চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলে। এই অবস্থায় গাড়িতে করে ভুক্তভোগীকে অপহরণকারীরা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে রাখে। ভুক্তভোগীর মানিব্যাগে থাকা ডিবিবিএল ব্যাংকের এটিএম কার্ডের পিনকোড চায়। তাদেরকে পিন কোর্ড দিতে অস্বীকার করলে নির্যাতন করে। এরপর নির্যাতনের মুখে পিন কোর্ড নিয়ে ব্যাংকের ব্যালেন্স জেনে নেয়। তারপর ভুক্তভোগীর মোবাইলে একটি অ্যাপস ইনস্টল করে। এরপর সেই অ্যাপস ব্যবহার করে একটি সিটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পৃথক পৃথক লেনদেনে বিবাদীরা সিটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৩০ টাকা ট্রান্সফার করে নেই। সব মিলিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে তারা ৯ লাখ ১৯ হাজার ২৯ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পান্থপথ রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দা মামলায় আরও অভিযোগ করেন, টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর অপহরণকারীরা একটি সাদা কাগজে তার স্বাক্ষর নেয়। এরপর তাকে আবারও কালো কাপড় দিয়ে চোখ ও মুখ বেঁধে রেখে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে ভুক্তভোগী বাসায় গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি থানা এসে মামলা করেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি তদন্তে নেমে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর বিষয়টি শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কে জানালে তিনি অভিযুক্তদের শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরপর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। বর্তমানে তারা রিমান্ডে রয়েছেন।
ডিআই/এসকে