ঢাকা, রবিবার, ৪ঠা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
পাবনার আটঘরিয়ায় নুরে মদিনা হজ্ব কাফেলার উদ্দোগে হজ্ব প্রশিক্ষণ ও দোয়া
ফুলবাড়ীতে বিশ্বমুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত
শ্রীনগরের হাঁসাড়ায় কথা কাটাকাটির জের ধরে হামলা
পলাতক মালিকদের ধরতে রেড অ্যালার্ট জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে:শ্রম উপদেষ্টা
চুরি যাওয়া একটি মোটরসাইকেল উদ্ধারে গিয়ে মিলল আরও চারটি, গ্রেফতার ৩
পুরান পল্টন ভবনের টপ ফ্লোরে আগুন,নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
ঘোড়াঘাটে অগ্নিকান্ডে একটি গরুসহ ২লাখ টাকার মালামাল ভস্মীভূত
নাইক্ষ্যংছড়িতে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সমাবেশ
নওগাঁয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-২
আলীকদম উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে চার মাদকসেবী আটক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে শনিবার ভারত যান সন্তু লারমা
পাঁচবিবিতে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন জামায়াতের শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত
রাজবাড়ীতে অস্ত্র মামলার ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার
শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের সহযোগী ‘শুটার বিপু’ গ্রেফতার
নোয়াখালীতে বিএনপির ট্যাগ লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রীর জমি দখল

এবার হানি ট্র্যাপের শিকার নোয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক,চরম মারধোরের পর ৬০ লাখে মুক্তি!

ঢাকায় আবারও আলোচনায় ‘হানি ট্র্যাপ’। এবার হানি ট্র্যাপের শিকার হলেন নোয়াখালী জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। দাওয়াত রক্ষা করতে গিয়ে জিম্মি হয়ে বেদম নির্যাতন, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের পর ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান তিনি।

অনেক আগে থেকেই সংগীতের প্রতি দুর্বলতা সরকারি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। মাঝেমধ্যেই গান গাওয়ার পাশাপাশি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেন তিনি। এ সুবাদেই পরিচয় ঢাকার মডেল তনয়া হোসেনের সঙ্গে, যার প্রকৃত নাম নাজমুন নাহার সুখী (২৮)। এরপর তার সঙ্গে অনেকটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে জাহাঙ্গীর আলমের। তারা একসাথে একটি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ও করেন।

তাদের এই সম্পর্কের একপর্যায়ে মঞ্চে আসেন তনয়ার বড় বোন তানিশা, যার আসল নাম কামরুন নাহার আঁখি (৩২)। তার স্বামী দুবাইয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছেন, চিকিৎসার জন্য দরকার পাঁচ লাখ টাকা- এই কথা বলে জাহাঙ্গীরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা চান তানিশা। সহানুভূতিশীল হয়ে সেই টাকা দেন জাহাঙ্গীর।

এভাবেই তনয়া-তানিশার ভয়াবহ ফাঁদের শুরু। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একদিন তনয়া তাদের ঢাকার বাসায় জাহাঙ্গীর আলমকে দাওয়াত করেন। গত ১৯ এপ্রিল নির্ধারিত সময়ে ঢাকার ছোলমাঈদ উত্তরপাড়ায় তনয়াদের বাসায় যান জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু তার জন্য যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে কল্পনাও করেননি তিনি।

ওই বাসায় আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল তনয়া-তানিশাসহ চক্রের আরও দুই সদস্য। জাহাঙ্গীর আলম বাসায় ঢোকার পরই তাকে বেঁধে ফেলে তারা। এরপর শুরু হয় মারধর, শ্বাসরোধে মারার চেষ্টা। প্রাণ বাঁচাতে জাহাঙ্গীরের কাছে দাবি করা হয় এক কোটি টাকা।

জিম্মি হয়ে পড়া জাহাঙ্গীর পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা পাঠাতে বলেন। এরপর এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ৫২ লাখ টাকা এবং বিকাশে পাঠানো হয় আরও ৮ লাখ টাকা।

৬০ লাখ টাকা পাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলমকে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তনয়া-তানিশা চক্র।  তাকে হুমকি দেওয়া হয়— কাউকে এ ঘটনা জানালে এসব ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে সামাজিক মাধ্যমে।
রাতে চক্রটি জাহাঙ্গীরকে নিয়ে গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়ে। বিভিন্ন পথ ঘুরে তাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় ফেলে যায় বাড্ডার এক অন্ধকার গলিতে।

বিপর‌্যস্ত জাহাঙ্গীর আলম একজন রিকশাচালকের সহায়তায় আশ্রয় নেন একটি হোটেলে। পরে চলে যান চট্টগ্রাম। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হলে ফিরে আসেন ঢাকায় এবং মামলা করেন ভাটারা থানায়।

এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল তনয়াদের ওই বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে তনয়া, তানিশা, সাফাত ইসলাম ও রুমানা ইসলামকে। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, বাকি টাকার একটা অংশ জমা রাখে ব্যাংকে,কিছু টাকা দিয়ে কেনে আইফোন।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে জাহাঙ্গীল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তাই তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

হানি ট্র্যাপ সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল আলোচিত একটি বিষয়। মডেল মেঘনা আলম ও সৌাদ  রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে এমনই এক ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হয় ‘হানি ট্র্যাপ’। মডেল মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন বিত্তশালীদের হানি ট্র্যাপে ফেলার। বাংলাদেশে মেয়াদ শেষে সৌদি রাষ্ট্রদূতের বিদায়ের সময় সামনে আসে মেঘনা সম্পর্ক। মেঘনা আলমের দাবি, ওই দূতের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। আর দূতের অভিযোগ, তার কাছে ৫ মিলিয়ন টাকা দাবি করে মেঘনা আলমের চক্র। দূতের অভিযোগ সূত্রে গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে আটক করা হয় মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলমকে।

পরে তাকে হানি ট্র্যাপ প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মেঘনা আলম, সহযোগী দেওয়ান সমিরসহ অচেনা দুই-তিনজন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা রূপবতীদের দিয়ে ভিনদেশি কূটনীতিক বা প্রতিনিধি এবং দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করে আসছে।

এ ধরনের ফাঁদে পড়ার হাত থেকে বাঁচতে সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে  ঢাকা মহানগর পুলিশ। পাশাপাশি যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ হলে পুলিশকে জানানোর কথা বলেন ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

ডিআই/এসকে

শেয়ার করুনঃ