মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি,
কক্সবাজার জেলার শস্যভান্ডার খ্যাত নাইক্ষ্যংছড়ির পাশ্ববর্তী রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বড় জাংছড়ি।
এ এলাকায় অকালে তরমুজ চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক ওমর আলী। তিনি মাত্র ১ কানি জমিতেই তরমুজ চাষ করে সফল হওয়ায় সে এখন দারুণ খুশি।
অকালের সুস্বাদু এ তরমুজের ক্ষেত শুক্রবার বিকেলে সরেজমিন গিলে কৃষক ওমর আলী তরমুজ ক্ষেতের বিষয়ে জানান এ প্রতিবেদক।
তিনি বলেন, মূলত ধান ও তামাক চাষী । তার গ্রামে হয়তো ধান চাষ নয়তো তামাক চাষ-ই করে থাকেন কৃষকরা। অন্যান্য চাষও আছে তবে যৎসামান্য। শীতে কৃষকের কাছে অতি পছন্দের চাষ হলো তামাক। কারণ তামাক চাষে লাভ বেশী। অনেকে লাখপতিও হয়েছেন। আবার লোকসানে অনেক ফকিরও হয়েছেন। যাদের অনেকে ঋণগ্রস্থ হয়ে দেশও ছেড়েছেন।
ওমর আলী আরো বলেন তামাক চাষ করলে বিপনন ব্যবস্থা থাকায় লাভের মূখ দেখেন অধিকাংশ কৃষক। তবে তামাক চাষ যে পরিবেশের ক্ষতি করে সে কথা সব কৃষক জানেন।
কিন্ত উন্নত পণ্যের অন্য চাষ না থাকায় এক শ্রেণির কৃষক তামাককে মুল চাষ হিসেবে ২ দশক ধরে করে আসছেন।
তিনি তরমুজ ক্ষেতের বিষয়ে বলেন, (ইপসা নামের) একটি এনজিও সংস্থা তাকে অতি মুনাফার কথা বলে জাপানী জাতের কিছু তরমুজের বীজ এনে দেন। আর শিখিয়ে দেন কিছু কৌশলও।
সেবাবেই তিনি গেল বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে এই মাচাং দিয়ে তরমুজের চাষ শুরু করেন। প্রথমে বাছাই করেন জমি। ২০ শতক জমিতে এ চাষ শুরু করে ১ হাজার চারা রোপন করেন সেখানে।
তার মতে,এভাবে চারা গাছ বড় হয়ে ৭০ দিনের মাথায় ফলন দিতে শুরু করে। ৯০ দিনের মাথায় তরমুজের বড় সাইজগুলো পাকতে থাকে। খেয়ে দেখেন দারুণ স্বাদ এ তরমুজ। তিনি বাজারে তুলেন তরমুজ। বাজারজাত করতে প্রথমে কিছুটা সমস্যা দেখা দিলেও ২/১ দিন পর এ তরমুজের চাহিদা বাড়তে শুরু করে। এখন কিন্তু সুনার হরিণ।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। সাইজ ২ থেকে ৪ কেজি। আর এ তরমুজ পাইকারীতে বিক্রি করেন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় হলেও খুচরা বিক্রয় হচ্ছে ১২০ টাকায়।
এ প্রতিবেদক সরেজমিন গিয়ে আরো জানতে পারেন,কৃষক ওমর আলি বয়সে ৫৫ ছুঁই ছুঁই। তিনি এ এককানি জমির তরমুজ বিক্রি করে ইতিমধ্যে পয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আরো ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পাবেন বাকী তরমুজে।
তার মতে,অথচ এক কানি ধান চাষ করলে সেখানে পাওয়া যেত ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। তামাক চাষ করলে পাওয়া যায় ৫০/৬০ হাজার টাকা।
কিন্ত জাপানী জাতের এ তরমুজ চাষে তিনি প্রায় ২ লক্ষ টাকা পাচ্ছেন।
এ কারণে তিনি খুবই খুশি।
এ বিষয়ে রামু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা রহমান বলেন,উন্নত জাতের তরমুজ নিয়ে সরকারের অনেক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আর কচ্ছপিয়ার কৃষক ওমর আলির করা জাপানী জাতের তরমুজ নিয়ে ইতিমধ্যেই তিনি অবহিত হযেছেন। তার একজন প্রতিনিধি তরমুজ কৃষক ওমর আলীর ক্ষেতটি দেখে এসেছেন ইতিমধ্যেই । সুতারাং
এলাকার মাটি ও সার্বিক পরিবেশ যাচাই-বাছাই করে রামু কৃষি অফিস নতুন কিছু করতে চেষ্টা করবেন। ওমর আলীদের মুখে হাসি ফুটাতে কৃষি অফিস সচেষ্ট আছেন-থাকবেন। যেমনটি ইতিমধ্যে করে তার এলাকার কৃষকরা সফলও হয়েছেন।
তবে তিনি তামাককে বার বার না বলেছেন। যেহেতু এ তামাক এক ধরণের নিষিধ পণ্য।