নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে মিয়ানমার বিদ্রোহী আরকান আর্মি কতৃর্ক এক বাংলাদেশীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সীমান্তের লোকজন দফায় দফায় মিটিং করে ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বিজিবি নানা তৎপরতা চালাচ্ছে তাকে ফেরত আনতে। পক্ষান্তরে বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায় নি বলে জানিয়েছেন বিজিবি।
১১বিজিবি অধিনায়ক ও জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল কপিল উদ্দিন কায়েস বলেছেন,ঘটনাটি জানার পর থেকে নিজ অবস্থান থেকে তাকে ফেরৎ আনতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে বিজিবি। যেহেতু দু'দেশের বিষয় সুতারাং সহজেই এটি শেষ হচ্ছে না।
স্খানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শামশুল আলম দৈনিক দিনকাল প্রতিনিধিকে বলেন,গত ১০ এপ্রিল সোমবার সকালে বাগান পাহারাদার মুফিজুর রহমান (২৭) কে মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্টি আরকান আর্মি ( এএ) ধরে নিয়ে গেছে। একদল কাঠুরিয়ার সামনেই তাকে ধরে নিয়ে যায় তাকে। বর্তমানে তার পরিবারের মাঝে চরম আহাজারি ও অশান্তি বিরাজ করছে।
মুফিজুর রহমানের স্ত্রী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,আমার স্বামী একজন কাটুরিয়া ও বাগান পাহাদার ওই দিন সে সকালে লবন দিয়ে ভাত খেয়ে কাঠ কাটতে যায়। আজ ৭ দিন তার স্বামী এখনও ফেরৎ আসে নি। তিনি আরো বলেন তার ২ টি সন্তান। ১ টি ৩ বছরের আরেকটি গর্ভে। পৃথিবীতে তার আর কেউ নেই। ন্বামীকে সে ফেরৎ চায়। দেশের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তার মিনতি তার স্বামীকে ফিরিয়ে আনা হউক।
কান্নায় বারবার মুর্ছা যায় ৬০ বয়সী মা নুরজাহান বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন,তার ৫ মেয়ে ১ ছেলে। সে পিতার বাগান পাহারায় নিয়োজিত থেকে কাঠ কেটে তাদের ভরণপোষণ যোগায। ঘটনার দিন তাকে সালাম করে দোযা চেয়ে বাড়ি থেকে ছেলে মুফিজ বের হয়ে পিতার করা বাগান পাহারা ও কাঠ আনতে যায়। এ পর্যন্ত সে ফিরে আসে নি।সে না আসলে মা হিসেবে তার বেঁচে থাকার দরকার নেই। তিনি সরকার বাহাদুরের কাছে তার সন্তানকে ফেরৎ আনার ব্যবস্থা চায়।স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম আবু তাহের ও জসিম উদ্দিন বলেন,মুফিজ এলাকার সবচাইতে ভাল ছেলে। সে চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসী নয়। তার চৌদ্দ গোষ্টি বাংলাদেশী। সেও বাংলাদেশী।বার্মারনবিদ্রোহীরা কেন তাকে ধরে নিযে গেছে তা তারা বুঝে উঠতে পারছে না। গত ১০ এপিল থেকে সে আরকান আর্মির হাতে বন্দি রয়েছে।
তারা এ-ও বলেন, মুফিজকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা এ সীমান্তের বৃহত্তর ৩ গ্রামের কযেক হাজার মানুষ ফুঁসে উঠেছে। গত সোমবার এ সীমান্তের ফুলতলী স্কুল মাঠে সভা করে সীমান্তে কোন ধরণের যোগাযোগে সহায়তা না করার ঘোষণা দেন। মাইকিং করে দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ ও মুফিজুর রহমানকে ফেরৎ চেয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন,বিষয়টি তিনি জানলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তার বলা ঠিক হবে না। তবে এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করতে ভূক্তভেগীকে পরামর্শ দেন তিনি।