জীবননগর অফিসঃ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার পদ্মগঙ্গা বিল নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগ করা হয়েছে। পদ্মবিল মৎস্যজীবী সমিতি লিমিটেডের পক্ষে থেকে এই অভিযোগ করা হয়।
তাদের অভিযোগ, জীবননগর উপজেলায় অবস্থিত পদ্মগঙ্গা বিলটি তিন বছর ধরে ইজারা নিয়ে চাষ করে আসছে পদ্মবিল মৎস্যজীবী সমিতি লিমিটেড। তবে সম্প্রতি ওই বিলের ৬৯ দশমিক ৮৭ একর জমি পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের নিজেদের দাবি করে সেটি দখলে নেয়। এ বিষয়ে তারা আদালতের দারস্ত হয়। মিস আপিল-১৮/২০২৫ নম্বর মামলাটি শুনানীঅন্তে মিস আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জীবননগর সহকারী জজ আদালতের দেওয়ানী-২১/২০২৫ নম্বর মামলার ০৭/০৪/২০২৫ তারিখের ০৭ নম্বর আদেশ স্থগিত রাখার আদেশ দেন এবং ১ নম্বর প্রতিপক্ষ পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক যেন নালিশী জমির রূপ পরিবর্তন করিতে না পারে তার আদেশ দেন।
তারা আরও জানায়, জীবননগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈষদজাদী মাহবুবা মজুর মৌনা পথিলা জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করেন, রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর ২০ এর (২০) উপধারা অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে খননকৃত পুকুর ব্যাতীত অন্যান্য মৎস্য শিকারের ক্ষেত্র (বিল) শ্রেণিভুক্ত ভূমি কোনো অকৃষি প্রজা সরকারের অধীন প্রজা হিসেবে দখলে রাখার অধিকারী হবেন না। অথ্যাৎ সিএস /এস এ দাগের মালিক আরএস ২ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ১৩২ নম্বর দাগের ৬৭ দশমিক ৪০ একর জমি বিল শেণ্রিভুত্ত হওয়ায় তা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ণ কর্পোরেশন দখলে রাখার অধিকারী হবেন না।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর নামে রেকর্ডভুক্ত হওয়া ৬৭.৪০ একর 'পাথিলা বিল' জলমহাল রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের অনুকূলে আনয়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যে পারে।
আর এ বিষয় পদ্ম গঙ্গা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি গোপাল বলেন, প্রতি বছর তিন লক্ষ নব্বই হাজার টাকার বিনিময় তিন বছরের জন্য আমরা বিলটি ইজরা নিয়েছি সেই সাথে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ পদ্ম গঙ্গা বিলে ছাড়া হয়েছে।কিন্তু এভাবে আদালতের রায় অবজ্ঞা করে পদ্মগঙ্গা বিল দখল যেটি আমাদের জন্য বিশাল আকারের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক রাবণ ঘাঁটি বলেন, মঙ্গলবার দিনে দুপুরে পদ্মগঙ্গা বিলে থাকা আমাদের দুইটি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে সেইসাথে প্রকাশ্যে পদ্মগঙ্গা বিলের সকল মাছ হরিলুট করা হয়েছে আর এতে এক কোটি টাকার মতো ক্ষতিসাধন হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক কামাল উদ্দীন বলেন, সম্প্রতি পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের বে-দখলকৃত ৬৭ একর জমি চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকসহ নেতৃত্বে বিএডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দখলমুক্ত করেন। যেহেতু এটি আমাদের রেকর্ডের সম্পত্তি এবং শুরু থেকে আমরা এই জমির খাজনা দিয়ে আসছি সুতরাং এ ভূমি উদ্ধারে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসির উপ-সচিব ড. কেএম মামুন-উজ্জামান, বিএডিসির মহাব্যবস্থাপক (বীজ) মোহাম্মদ আবীর হোসেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বিএডিসির অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (খামার) ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মোল্লা ও জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-আীমন এছাড়াও জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এ জমি উদ্ধারে সহযোগিতা প্রদান করেন।পরবর্তীতে মঙ্গলবার( ১৫ ই এপ্রিল) প্রশাসনের লোকজন এসে বিএডিসি এবং বিলের জমি আলাদা করায় সহযোগিতা করেছে। তারা আরও কয়েকদিন থেকে এতে সহযোগিতা করবে।###