কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে শালিশ বৈঠকে সন্ত্রাসী কায়দায় পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার শ্রীকলা গ্রামে। শালিশ চলাকালিন আব্দুর রহিম (৫৩) ও আব্দুল করিম (৫৭) এর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী দা, সাবোল, বাঁশের লাঠি সহ স্থানীয় আসাদুজ্জান হাসা (৫৫) হালিমা খাতুন (৪৫) আমির হোসেন (২০) এর উপর আক্রমন করে। হামলাকারীদের ঠেকাতে শালিশ বৈঠক থেকে আব্দুল আজিজ ও মনিরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা এগিয়ে এলে আব্দুল করিমের পুত্র ফরিদ হোসেন, ইমরান হোসেন, আব্দুর রহিমের পুত্র ইয়াসিন আলী এলোপাতাড়ী দার কোপ চালায়। এ সময় হালিমা খাতুনের মাথায়, মনিরুল ইসলামের হাতে এবং আব্দুল আজিজের গলায় দার কোপ লাগে। দার কোপে মারাত্বক আহত হালিমা খাতুন, আব্দুল আজিজ ও মনিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে স্থানীয় ছাত্র জনতা কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে। হালিমা খাতুনের কপালে দার কোপ লাগায় তার আবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। বর্তমানে আহতরা কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি আছে।
ঘটনা সুত্রে স্থানীয়দের কাছ থেকে সরেজমিনে জানাগেছে, পৈত্রিক সুত্রে পাপ্ত কালিগঞ্জ উপজেলার শ্রীকলা মৌজার বি,এস ১৯৮ ও ৮৯৩ দাগে ১২ শতক, ৮৮৬ দাগে ৬৬শতক মোট ২টি দাগে (১২+৬৬) = ৭৮ শতক জমির মধ্যে .০৯০৩ শতক জমিতে আসাদুজ্জামান হাসা তার পরিবার গত ৫০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। এরই মধ্যে হটাৎ গত ১৫ ফেব্রæয়ারী সকাল ১০টায় হটাৎ আব্দুর রহিম, আব্দুল করিম, মোকছেদুর রহমান, মমতাজুর রহমান গং জবর দখলের উদ্দেশ্যে আসাদুজ্জামানের উঠোন ঘিরে দখলের উদ্দেশ্যে সিমানা নিদ্ধারণ করে খোটা মারে। এসময় আসাদুজ্জামান হাসা কোন উপায় না পেয়ে স্থানীয়দের স্মরণাপন্ন হয়। হামলাকারীদের বারবার হুমকী ধুমকীর ফলে উপায় না পেয়ে আসাদুজ্জামান হাসার পুত্র আমীর হামজা আদালতের আশ্রয় নিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসের জন্য ফৌজদারী কার্য্যবিধি আইন ১৪৫ ধারা মতে প্রতিকার দাবী করেন। বিজ্ঞ আদালত অধিকতর তদন্ত ও শান্তি রক্ষার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি ও কালিগঞ্জ থানাকে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে মমতাজুর রহমান নিজে বাদী হয়ে আদালতের সরনাপন্ন হয়ে আরেকটি ১৪৫ ধারা জারী করেন। মমতাজুর রহমানের পক্ষে কালিগঞ্জ থানার এএসআই সুব্রত কুমার দেবনাথ এবং আমীর হামজার পক্ষে এসআই সুদেব পাল তদন্ত করে আদালতে প্রেরণ করবেন। সে লক্ষে স্থানীয় শ্রীকলা গ্রামের শতাধিক গন্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে গতকাল শনিবার বিকালে শ্রীকলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি শালিশের আয়োজন করে। উভয় পক্ষের শোনানীর পর বিরোধ মিমাংশার শেষ পর্যায় পরিকল্পিত ভাবে আব্দুল করিমের পুত্র ইমরান হোসেন আক্রমনাক্তক আচারণ ও কথা বলে শালিশ ভুন্ডুল করে দেয়। আগে থেকে ওতপেতে থাকা আব্দুর রহিমের পুত্র ইয়াসিন হোসেন ও আব্দুল করিমের পুত্র ফরিদ হোসেন ও তার সাথে থাকা সন্ত্রসীরা দা, সাবোল, লাঠি নিয়ে হামলা করে। হামলায় হালিমা খাতুন, মনিরুল ইসলাম ও আব্দুল আজিজ মারাত্বক জখম হয়।
স্থানীয় মোমিন আলী বলেন, আমি আমরা একজায়গায় শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছি। একই দাগের জমি কিনে তারা ৪০ বছর আগে বুঝে নিয়েছে। এখন তারা পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে এবং তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। জমির মালিক আসাদুজ্জামান হাসা বলেন আমার পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে আমি ৫০ বছর ধরে বসবাস করছি। ৪০ বছর আগে তারা তাদের প্রাপ্য অংশ বুঝে নিয়ে ভোগ দখল করে আসছে। আমি .০৯০৩ পাবো সে অংশ বুঝে নিয়ে ৫০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। আমার বসবাসের স্থানে আব্দুর রহিম, আব্দুল করিম, মোমতাজুর রহমান, মোকছেদুর রহমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী হটাৎ খোটা মেরে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছে। আমার জমি কোথায়? আমি নিরাপদে বসবাসের জন্য ১৪৫ করেছি। তারপরেও আমাদের উপর হামলা। শালিশকারী আব্দুল আজিজ বলেন, শালিশের শেষ মুহুর্তে আব্দুল করিমের পুত্র ইমরান হোসেন অশালিন কথাবার্তার মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট করে। আগে থেকে ওতপেতে থাকা ফরিদ হোসেন ও ইয়াসিন গাজীর নের্তৃত্বে সন্ত্রসী কায়দায় দা, সাবোল, লাঠি নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। আমরা এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছি। মনিরুল ইসলাম বলেন বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষে আমরা সবাই চেষ্টা করছি। ৪০ বছর আগে তারা তাদের জমি বুঝে নিয়ে ভোগ দখল করে আসছে। পরিবেশ অস্থিতিশীল করার লক্ষে আব্দুর রহিম, আব্দুল করিম, মমতাজুর রহমান, মোকছেদুর রহমান ষঢ়যন্ত্র করে আসাদুজ্জামান ও তার পরিবারের উপর হামলা করেছে। বিষয়টি দুঃখ জনক। স্থানীয় সাবেক মেম্বর মাহমুদ আলম মন্টু বলেন আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলাম বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য। তারা এভাবে পরিকল্পিত হামলা করবে আমি বুঝতে পারিনি। বিষয়টি দুঃখজনক। এসময় শালিশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন কাজী ডাবলু, আবু দাউদ, শফিকুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, আব্দুর রহমান, মনিরুজ্জামান শিমুল সহ স্থানীয় শতাধিক ছাত্রজনতা। এব্যাপারে ১৪৫ করা আমির হামজার পক্ষে কালিগঞ্জ থানার এস আই সুদেব পাল বলেন এখানে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। আমি চেষ্টা করছি দায়িত্ব পালনে। আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে শান্তি রক্ষার চেষ্টা করছি। অন্যদিকে মমতাজুর রহমান এর পক্ষে ১৪৫ করা সুব্রত কুমার দেবনাথ বলেন পরিবেশ স্থিতিশীল রাখা আমার কাজ। এব্যাপারে কালিগঞ্জ থানায় আমীর হামজার পক্ষে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানাগেছে।