
নাইক্ষ্যংছড়ির পাশ্ববর্তী রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বড়বিলে ৩ ডাকাত দলের শতাধিক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায়
আহত-৩ জন। স্থানীযরা বলছেন, এসব শাহিন জুনাইদ প্রকাশ জুনু গ্রুপের উপদ্রুপ। যাতে অতিষ্ট পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীর মগের বিল গ্রাম থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে ৮ টি গুলির খোসা। এ ঘটনায় যা নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ও রামু উপজেলার গর্জনিয়া বড় বিল এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজমান।
শুক্রবার ( ১১ এপ্রিল) দুর্গম গর্জনিয়া এলাকায় রাত সাড়ে ৯ টা থেকে টানা ১ ঘন্টা খানেক আর থেমে থেমে রাতভর গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠল রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বড়বিল ৪ গ্রাম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দক্ষিণ বাইশারীর অন্তত ১০ টি গ্রাম। এ ঘটনায় অনেকের ঘুম ভেঙ্গে ভারী অস্ত্রের প্রকট শব্দে। আবার অধিকাংশ মানুষ ঘুমোতে যাচ্ছিল তারা কাঁপছিল আতংকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ছাবের আহমদ জানান,
তখন তিনি রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বড়বিলের জারুরিয়া ঝিরি বিলে ব্যুরো ধানের সেচ দিচ্ছিলেন । রাত তখন ৯ টা।
হঠাৎ ২০/২২ জনের অস্ত্রধারী মূখোশপড়া যুবক তাকে মারধর শুরু করে। তার হাত বেঁধে মারধর করে ডাকাত জুনায়েদ ওরফে জুনু ডাকাতের বাড়ি দেখিযে দিতে বলে। অপরগতা প্রকাশ করায় বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করতে থাকে।
পরে তার কাছে থাকে ২ টি মোবাইল ফোন এবং ৩৭শত ধান বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পু্র্বদিকে চলে যায়।
স্থানীয় বৃদ্ধা আবদুশুক্কুর সওদাগর বলেন,
রাত ৯ টা ২০ মিনিটের দিকে ২০/২২ জনের মূখোশপরা অস্ত্রধারী যুবকদল
তার দোকানে এসে তার মোবাইল কেড়ে নেয় । সাথে আরো ২ জনের। তারা হলেন, মন্জুরের ছেলের আবুল ফজল ও মোহাম্মদ হোসনের ছেলে অপর আবদু শুক্করের।
তিনি আরো বলেন,ডাকাত দল এক পর্যায়ে যুবক আবদু শুক্করকে ধরে পাশের
হাইজ্জা মুরার কালভার্টের পাশে নিয়ে গিয়ে প্রথমে ১ রাউন্ড গুলি করে তাকে। এতে সে আহত হয়। অপর আহত ডাকাত সদস্যকে শাহিন বাহিনীর সদস্যরা কাঁদে করে নিয়ে যেতে দেখেছে স্থানীয়রা। তবে তার নাম তৎক্ষনাৎ জানা যায় নি।
স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী,আবু ছৈয়দ ও মুহাম্মদ জুনাইদ বলেন,আগত ২০/২২ জন যুবক সবাই ডাকাত শাহিন গ্রুপের সদস্য।
তারা রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বড়বিলের এ শুক্করের দোকানের সামনে দাড়িয়ে গর্জন খালের পুর্বপারের জুনাইদ প্রকাশ জুনু ডাকাতে
বাড়ির দিকে বন্দুক থাক করে প্রায় ৫০/৬০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এ সময় বাইশারীর মগের বিলের অন্তত অর্ধশত বাড়ি ঘর থেকে মানুষ অন্যত্র সরে যায। অনেকের বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয় শাহিন ডাকাতের সদস্যরা।
ডাকাত বলে আখ্যা দেয়া সেই শাহিনুর রহমান শাহিনের সাথে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
তবে তার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র দাবী করেছে, আসলে এ সব জুনু ডাকাত তথা জুনাইদ ডাকাতের কারিশমা। তারা শতাধিক রাউন্ড গুলি করেছে আতংক ছড়ানোর জন্যে। শাহিন ভাইয়ের আগমন মনে করে জুনু ডাকাত তার সতীর্থ রুস্তম ডাকাত ও কামাল ডাকাতের লোকজনকে খবর দেয়। যোগ দেয়। ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে।
সূত্র আরো বলেন,জুনু ডাকাত গং মিয়ানমারের সুপারী,গরুসহ নানা পণ্য লুট করে চাঁদা নেয়। আর বাড়ি-ঘর দোকান-পাট ডাকাতি ও বাজারে ডাকাতি করাই তার মূল কাজ। দিনে লোক দেখানো নামাজ ও পড়ে জুনু ডাকাত ও তার অপর গড় ফাদাররা।
স্থানীয় নেজাম ডাকাত নামের অপর আরেকটি গ্রুপ সুত্র জানান,এ সব তারা করে নি। শুক্রবার রাতের গোলাগুলি শাহিন ডাকাত ও জুনু ডাকাতের মধ্যে হয়েছে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মো:মাশরুরুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন,তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন অনেককিছু জেনেছেন। ৮ টি বুলেট উদ্ধার করেছেন। যা রামুর গর্জনিয়ার অংশ থেকে করা হয় বলে তার ধারণা । উদ্ধার করা এসব এসএমজির বুলেট বলে তার ধারণা। পরে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে গোলাগুলির ঘটনাস্থল রামুর গর্জনিয়া এলাকায়।
এদিকে রামু থানা অফিসার ইনচার্জ
ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন,ঘটনাস্থল উপজেলা সদর থেকে বেশ দূরে। তাকে কেউ ঘটনার কথা জানান নি।
রামু থানা অধিন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ রাজেস বড়ুয়া এ প্রতিবেদককে বলেন,গোলাগুলির ঘটনা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দক্ষিণ বাইশারী গ্রামে। রামুতে নয়।