বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হওয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় ভয়ংকর প্রতারক সিকদার লিটনকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত। মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন।
৪ আগস্ট রাজধানীর বসিলা ব্রিজ এলাকায় নাজমুল সাকিল ফুয়াদকে গুলি করে হত্যা চেষ্টা চালানো হয়। সেই মামলায় লিটনকে মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি এই প্রতারক।
এদিকে ৫ মার্চ ফরিদপুর শহর থেকে ডজনেরও বেশি মামলার আসামি সিকদার লিটনকে গ্রেফতার করে ফরিদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সিকদার লিটন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের সিদ্দিক সিকদারের ছেলে। সে ঢাকার কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা ও ভাটারা থানায় হত্যা মামলা হয়। এছাড়া ডিএমপির পল্লবী, কলাবাগান থানায় চাঁদাবাজি ও সাইবার অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে। এছাড়া ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও কোতোয়ালিসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশ কয়েকটি মামলার রেকর্ড।
নানা অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে এর আগেও বারবার কারাগারে থাকতে হয়েছে অসংখ্য মামলার এই আসামিকে। ২০২৪ সালে দীর্ঘ প্রায় চারবছর জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আবারও প্রতারনা, মামলা বাণিজ্যসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। নভেম্বর থেকে পরবর্তী তিনমাসে তার ব্যাক্তিগত বিকাশ অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২২ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মো. জাবেদ নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। ১৩ আগস্ট ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ বিষয়ে পরিবার এখন পর্যন্ত কোনো মামলার পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ, সিকদার লিটন নিজেকে জাবেদের খালাতো ভাই দাবি করে ঢাকার আদালতে একটি সিআর মামলার আবেদন করে, যা সম্পূর্ণ বানোয়াট।
এই সিকদার লিটন নামের ব্যক্তির সঙ্গে নিহত জাবেদের পরিবারের কোনো রকম আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। এমনকি তাকে কোথাও কোনো মামলার আবেদন করার অনুমতি, সম্মতি বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নিও দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় নিহত জাবেদের ভাই মাইনুদ্দীন মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার তদন্ত করছে পুলিশ।
ডিআই/এসকে