মার্চজুড়ে দেশের সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৩৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসময়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৬৪৭ জন মিয়ানমারের নাগরিককে আটকের পর নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

মাসটিতে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৫২ কোটি ৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.শরীফুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

বিজিবি জানায়, জব্দকৃত চোরাচালান পণ্যের মধ্যে ৭ কেজি ৯৫৮ গ্রাম সোনা, ৭৮০ গ্রাম রূপা, ২৫ হাজার ১৭৩টি শাড়ি, ১০ হাজার ৭০১টি থ্রি পিস/শার্ট পিস/চাদর/কম্বল, ২২ হাজার ২৮০টি তৈরি পোশাক, ৩৩ হাজার ৮৮৯ মিটার থান কাপড়, ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৭টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ১ হাজার ৭৬২টি ইমিটেশন গহনা, ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ১৯৬টি আতশবাজি, ৬ হাজার ৯২৯ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ২৩৬ কেজি চা পাতা, ২৫ হাজার ৬৫৬ কেজি সুপারি, ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৪ কেজি চিনি, ১০ হাজার ৬৯০ কেজি সার, ৯৭ লিটার অকটেন, ২৫ হাজার ৯০০ কেজি কয়লা, ২১২ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল রয়েছে।

এছাড়া ৫২২টি মোবাইল ফোন, ৭৪৯টি মোবাইল ফোন ডিসপ্লে, ৮৬ হাজার ৭৮১টি চশমা, ১২ হাজার ৭৩১ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৩ হাজার ৬৪১ কেজি ভোজ্যতেল, ৯৫১ কেজি পেঁয়াজ ও রসুন, ১৭ হাজার ২৩৫ কেজি জিরা, ৬ হাজার ৩২৫ কেজি কিসমিস, ১ লাখ ৩ হাজার ৯৫৩ পিস চকোলেট, ৪টি কষ্টিপাথরের মূর্তি, ১০টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ৭টি পিকআপ, ২টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৪টি ট্রলি, ১৭টি নৌকা, ২০টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬২টি মোটরসাইকেল এবং ৩৫টি বাইসাইকেলও রয়েছে জব্দ পণ্যের মধ্যে।

অন্যদিকে, উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৩টি ওয়ান শুটারগান, ৪৬ রাউন্ড গুলি, ৩৩ হাজার ১০০ রাউন্ড সীসার গুলি।

এছাড়া গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৭ লাখ ৪৭ হাজার ১৬১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম হেরোইন, ৪ কেজি ১০৫ গ্রাম কোকেন, ১৬ হাজার ২৪২ বোতল ফেনসিডিল, ৯ হাজার ৩৭৭ বোতল বিদেশি মদ, ৪৪ লিটার বাংলা মদ, ১ হাজার ২৩৫ বোতল ক্যান বিয়ার, ২ হাজার ৬১১ কেজি গাঁজা, ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৩৯ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৩৪টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫ হাজার ৩৪০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫৫ বোতল এমকেডিল/কফিডিল, ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট, ১২ বোতল এলএসডি এবং ৮৪ হাজার ২০০ অ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট।

বিজিবির এ কর্মকর্তা আরও জানান, সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩৪ জন চোরা কারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৩৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৬৪৭ জন মিয়ানমারের নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ডিআই/এসকে