
রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযানের সময় তার ল্যাপটপ ও মোবাইলের ফেসবুক চেক করে অনেকগুলো সরকার বিরোধী প্রচারণা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তুরিন আফরোজকে গ্রেফতারে সোমবার রাত ১০টা থেকে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসায় অভিযান চালায় উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। রাত ১২টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয় থানায়। গ্রেফতারের পর উত্তরা পশ্চিম থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের ডিসি। এসময় উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
উত্তরা বিভাগের ডিসি বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে আব্দুল জব্বার (২১) নামের একজন ছাত্রকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবিদ্ধ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলার ৩০ নম্বর আসামি তিনি। এ মামলায় আজ রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আমরা তাকে থানায় নিয়ে এসেছি। আগামীকাল তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি জানান, গ্রেফতারের সময় তুরিন আফরোজের ব্যবহৃত মোবাইল ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে। এসব ডিভাইসে ব্যবহৃত ফেসবুকে সরকারবিরোধী প্রচারণা পাওয়া গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে নীলফামারিতেও মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম।
তুরিন আফরোজ ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফরোজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নিযুক্ত করা হয়। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিবিদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করেন। ২০১৮ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এক আসামির সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তুরিন আফরোজকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অভিযোগ আছে, জামায়াতের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও কোণঠাসা করে রাখতে নিজের জন্মদাত্রী মাকে ওই সংগঠনের রোকন বলে অপপ্রচার করে বেড়াতেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। এছাড়া অনৈতিক ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ায় আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ মাকে উত্তরার বাসা থেকে বেরও করে দেন তিনি।
ডিআই/এসকে