ঢাকা, বুধবার, ২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
বাস্তব জীবনে সরল অংক
মিরসরাইয়ে পথচারী’কে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী নিহত
পাঁচবিবিতে পৌর জামায়াতের কর্মীদের নিয়ে ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
বিরামপুরে শ্বাশুড়ির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে জামাই
চুরির অপবাদে বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৪
দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের মতো কিছুই হয়নি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১৮ মামলার আসামি ঢাকায় গ্রেফতার
ভূরুঙ্গামারীতে জামাত-শিবিরের ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠিত
আত্রাইয়ে ঈদ আনন্দে দুর্ঘটনা রোধে ছাত্রদলের সচেতনামূলক প্রচারণা
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার (অব:) নবিউল হক মারা গেছেন
নোয়াখালীতে বিএনপি নেতাকে কোপালেন যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতকর্মিরা
কলাপাড়ায় সিকদার পরিবারের ঈদ পুনর্মিলনী
লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রা-সীদের গু-লিতে গু-লিবিদ্ধ এক শিশু
আত্রাই থানা বিএনপি’র ঈদ পরবর্তী মতবিনিময় সভা
কচ্ছপিয়া বিএনপি কর্তৃক এমপি কাজলের পক্ষে এলাকায় ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

নান্দাইলে উৎসব মুখরহীন ভিজিএফ চাল বিতরণ: কার্ড ভাগাভাগিতে সুষ্ট বন্টন

স্টাফ রিপোর্টার: পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ ১৩টি ইউনিয়নে ভিজিএফ চাল বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ভিজিএফ চাল বিতরণে অসহায়, দু:স্থ সাধারন মানুষের মাঝে ছিলনা কোন উৎসব মুখর পরিবেশ। তবে ভিজিএফ চাল বিতরণের কার্ড এর ভাগাভাগির বিষয়ে ছিল সুষ্ট বন্টন। জানাগেছে, ঈদ উপহার হিসাবে অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে বিশেষ সহায়তার ‘ভলনারেবল গ্রুপ ফিডিং’ (ভিজিএফ) এর ১০ কেজি চালের কার্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছে চেয়ারম্যান-মেম্বার, বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতাকর্মীরা। নান্দাইল পৌরসভা সহ ১৩টি ইউনিয়নে ভিজিএফ এর ৩৪ হাজার ৯৯৬টি কার্ড বরাদ্দ ছিল। এরই মধ্যে পৌরসভা পেয়েছে ৪ হাজার ৬২১টি কার্ড এর বিপরীতে ২৬.২১০ মে.টন চাল বরাদ্দ এবং ১৩ ইউনিয়নের ৩০ হাজার ৩৭৫টি কার্ড এর বিপরীতে ৩০৩.৭৫০ মে.টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এতে ১নং বীর বেতাগৈর ইউনিয়নে ১৩৭৩টি কার্ড, ২নং মোয়াজ্জেমপুর ২৭৩৪টি, ৩নং নান্দাইল ২০০০টি, ৪নং চন্ডিপাশা ৩০৬০টি, ৫নং গাংগাইল ২৬৯৫টি, ৬নং রাজগাতী ২১৬৫টি, ৭নং মুশুল্লী ২৫৫২টি, ৮নং সিংরইল ২১৫৯টি, ৯নং আচারগাঁও ২২১১টি, ১০নং শেরপুর ২২৯৮টি, ১১নং খারুয়া ২২৩২টি, ১২নং জাহাঙ্গীরপুর ২৮৪৫টি ও ১৩নং চরবেতাগৈর ইউনিয়নে ২০৫১টি কার্ড বরাদ্দ প্রদান করা হয়। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন অসহায়, হতদরিদ্র সাধারন মানুষ জানান, অন্যান্য সময়ে আমরা কার্ড পেলেও, এবার কখন কোথায় কে কার্ড বিলি করেছে তা আমরা জানিনা। এছাড়া এখন পায়নি বললে পরবর্তীতে আর পাবো না, দয়া করে মাফ করবেন সাংবাদিক সাহেব। এদিকে পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধিত্ব না থাকায় প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ দায়িত্ব পালন করলেও ভিজিএফ এর কার্ড ভাগাভাগিতে প্রত্যেক ইউপিতে চেয়ারম্যান ও মেম্বার মিলে পেয়েছেন ৫০০টি কার্ড। এছাড়া বাকী কার্ডগুলো পেয়েছেন নান্দাইল উপজেলার বিএনপি’র চার গ্রুপ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (জামাত), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতাকর্মীরা। তবে তুলনামূলকভাবে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা কার্ড এর ভাগের অংশ ছিল বেশী। যদিও চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের অবর্তমানে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসক হিসাবে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিগণ উক্ত বরাদ্দের চাল ডিও করে থাকেন এবং তাদের স্বাক্ষরই ভিজিএফ এর তালিকা তথা কার্ড বিতরণ চূড়ান্ত হয়ে থাকার কথা রয়েছে। তবে অলিখিতভাবে দলীয় কার্ড হিসাবে নির্বাচিত সরকার না থাকায় বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মাধ্যমে তা সুষ্ঠ বন্টন করা হয়। কিন্তু চাল উত্তোলনের পূর্বেই অলিখিতভাবে চাল উত্তোলনে পরিবহন খরচ ও চাল বিতরণে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিগণ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা (চৌকিদার) এর খরচা বাবদ ৩ মেট্রিক টন চাল আলাদা বন্টন করে রাখা হয়। ভিজিএফ কার্ড বন্টনের ক্ষেত্রে উদাহরণ স্বরূপ পৌরসভায় বিএনপি’র একাধিক গ্রুপ নিয়েছেন ৩৫৯৫টি কার্ড, জামাত নিয়েছেন ৯০৩টি কার্ড ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা সহ অন্যান্য দল নিয়ে ১২৬টি কার্ড। ঠিক তদ্রুপ প্রত্যেকটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান-মেম্বারগণ মিলে ৫০০ করে সর্বমোট পেয়েছেন ৬৫০০টি কার্ড এবং বাকী ২৩ হাজার ৮৭৫টি কার্ড পেয়েছেন বিভিন্ন দলীয় নেতাকর্মীরা। কিন্তু ভিজিএফ বিতরণকালে কার্ড অনুযায়ী চাল উত্তোলনে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজমান ছিল না। ফলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ভিজিএফ এর কার্ড বন্টন সুষ্ঠ হলেও ভিজিএফ চাল উত্তোলনে কে বা কারা চাল উত্তোলন করেছেন তা নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, এবার আমাদের কোন দায়িত্ব ছিল না, নামমাত্র ৫০০ কার্ডে কাকে দিবো কাকে দিবোনা, তা নিয়ে সংশয় ছিলো। তারপরেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। এ দিকে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিভিন্ন দলের একাধিক নেতাকর্মী জানান, আমারা ভিজিএফ এর কার্ড যথাযথভাবেই বিতরণ করেছি। সুষ্ট বন্টন ও যথাযথভাবে বিতরণ করায় কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়নি। এদিকে সরকারি কর্মকর্তা সহ দায়িত্বশীল অন্যান্যরা জানান, ভিজিএফ চাল বিতরণের কথা মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে এ-সংক্রান্ত কোনো সভা হয়নি। এছাড়া বিতরণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পায়নি। এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার বলেন, চাল বিতরণের বিষয়ে এপর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। তবে বিতরণকালীন ভিজিএফ এর কার্ড না পাওয়ার বিষয় নিয়ে ফেসবুকে একজন পোস্ট করার পর বিষয়টি জানতে পেরে আমি উনার বাড়িতে গিয়ে ঈদ উপহার দিয়ে আসি। এখানে আবেদনকারী ছিল ১ লাখের উপরে, ১৩ ইউনিয়নে বরাদ্দৃকত কার্ড ছিল ৩০ হাজার ৩৭৫। তবে কার্ডধারীরা চাল পায়নি, তা এখনও শোনেনি।

শেয়ার করুনঃ