
পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীর মানুষের নিরাপত্তা দিতে জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি( বিভাগ ক্লান্তহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি বলেছেন, ‘রমজানে নগরবাসী যেন নিরাপদে ইবাদত বন্দেগি করতে পারে সেজন্য ডিবির কার্যক্রম আরো বেগবান করা হয়েছে।’
শনিবার (১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ‘পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ডিবির পরিকল্পিত কার্যক্রম’ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ডিবিপ্রধান বলেন,আজ থেকে আমরা ডিবির চলমান কার্যক্রমের পাশাপাশি রমজান সামনে রেখে বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছি। এটা হচ্ছে এক ধরনের বিশেষ গোয়েন্দা অভিযান। এই অভিযানে ছদ্মবেশে আমাদের সদস্যরা মানুষের মধ্য থেকে অপরাধীদের সনাক্ত করবে।
তিনি বলেন, রোজার সময় মানুষের কর্মব্যস্ততা বাড়ে বিশেষ করে টাকা পয়সার লেনদেন বেশি হয়। শপিংমল, ব্যাংক, বিমাগুলোতে মানুষের ভীর বাড়ে। রেল স্টেশন বাস টার্মিনালে কিংবা সদরঘাটের মত জায়গায় মানুষের উপস্থিতি বাড়ে। এসব জায়গায় কেউ যাতে নাশকতা না করতে পারে , সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ মাসকে কেন্দ্র করে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য গোয়েন্দা তাৎপরতার মাধ্যমে আমরা আগে থেকেই ডিবির তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছি।
এসময় ডিবিপ্রধান জানান, আমাদের গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, চুরি ছিনতাই ডাকাতির সাথে যারা যুক্ত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। এদের মধ্যে অনেকেই কিশোর গ্যাং। তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত পড়ছে, আবার কিছু পতিত রাজনৈতিক শক্তি তাদের ইন্দন দিয়ে অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনীর কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি তাদের বিরুদ্ধে আমরা অলআউট অ্যাকশনে যাচ্ছি।
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, মহানগরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। আমাদের কাজ হচ্ছে গোয়েন্দা নজরদারী শক্তিশালী করা, আমরা এটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা আশা করি, কিছু দিনের মধ্যে আপনার আরো ভালো অবস্থান দেখতে পাবেন।
এ সময় সকলকে তথ্য দেওয়ার সহায়তা করার অনুরোধ জানান ডিবিপ্রধান। বলেন, জনসাধারণের প্রতি আমাদের আহ্বান ডিবি পরিচয় কেউ গোপনে তুলে নেয়া বা সিভিল পোশাক কেউ তল্লাশির মত কার্যক্রম করলে আমাদেরকে অবৈধ করবেন পাশাপাশি নাশকতা করতে পারে এমন কোন তথ্য থাকলে ডিবি আপনারা ডিবিকে তথ্য দিন। আমরা আপনাদের পরিচয় গোপন রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি আরও বলেন, এ দেশ আপনার আমার সকলের। দেশে শান্তি থাকলে শান্তি থাকবে জনমনে। দেশকে নিরাপদে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত থেকে শুরু করে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা বধ পরিকর। তারই অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ডিবি কর্তিক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিনতাইকারী ডাকাত ও অভ্যাস গত অপরাধীদের আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।
ডিবিপ্রধান বলেন, ছোট অপরাধ বড় অপরাধের জন্ম দেয়। তাই সব ধরনের অপরাধে আমরা নিয়েছি জিরো টলারেন্স নীতি। চুরি ছিনতাই ও ডাকাতের রোধে ডিবির নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সমাজকে মাদকের থাবা থেকে দূরে রাখতে ডিবি প্রতিনিয়ত মাদক বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী হোক বা যে কোন অপরাধী হোক ডিবির জালে তাদের ধরা পড়তেই হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে এদেরকে আমরা বিন্দু মাত্র ছার দিব না।
সবশেষে তিনি বলেন, মাহে রমজানের নগরবাসীর জন্য নিরাপদে ইবাদত বন্দেগি করতে পারে এজন্য ডিবির কার্যক্রম আরো বেগবান করা হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি নগরবাসী যে সময় অধিকতর নিরাপদ সস্তির পরিবেশে থাকবে। যেকোনো প্রয়োজনে আপনাদের পাশে ডিবি রয়েছে। অন্তবর্তী কালীন সরকার এবং উদ্ধতন কর্মকর্তা নির্দেশ মোতাবেক নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করবো।
ডিআই/এসকে