
রাজধানীর মোহম্মদপুরের ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী,মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মো.বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবু এবং কব্জিকাটা আনোয়ারের অন্যতম প্রধান সহযোগী মো.রফিকুল ইসলাম রানা ওরফে রিফাতসহ ৮ জন সদস্যকে মাদক ও বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা অন্যান্যরা হলেন,‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর সদস্য সাকিব মৃধা (২২), মো.রিয়াজ সরদার (২১), মো.শাকিল (২৫),মো. মনিরুল হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৫),মো.সুমন হক (২৪) ও মো. লামিম (২০)।
রবিবার সাভারের হেমায়েতপুর ও মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে পৃথক অভিযানে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৪টি সামুরাই, ৪ টি চাপাতি,২টি ছুরি, ২ টি চাইনিজ কুড়াল, ২ টি হাতুড়ি, ৪৫০ পিচ ইয়াবা, নগদ ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৯০০টাকা, ১ টি মাদকদ্রব্য পরিমাপ করার ডিজিটাল স্কেল, ১৩ টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এন্ড্রয়েড মোবাইল ও ৪ টি বাটন মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
সোমবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে র্যাব-২ ব্যাটেলিয়নের সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ব্যাটেলিয়নটির অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো.খালিদুল হক হাওলাদার।
তিনি জানান,সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর আলম নগর সুগন্ধা হাউজিং এলাকায় একটি বিল্ডিং এর ৩য় তলার ফ্ল্যাট (১নং আসামী মো. বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবু (৩১) এর বর্তমান ভাড়া বাসার মধ্যে) কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকসেবীদের মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল র্যাব-২ এর আভিযানিক দল সেখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনাস্থলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে আসামিদের গ্রেফতার করে।
একইদিনে র্যাব-২ এর আভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে একদল সশস্ত্র যুবক ডাকাতির উদ্দেশ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান এলাকায় একত্রিত হয়েছে। পরবর্তীতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ার গ্রুপের ৫ জন সদস্যকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত টুন্ডা বাবুর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সে ও তার গ্যাংয়ের লোকজন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এছাড়া গ্রেফতারকৃত টুন্ডা বাবু মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের নিয়ে চাঁদাবাজি,ছিনতাই,ভূমি দখল সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম রানা ওরফে রিফাতের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়,ঢাকায় সে গাড়ীর হেলপার হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার সময় আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত হয়। সে কব্জিকাটা আনোয়ারের নির্দেশে মোহাম্মদপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি,মাদক ব্যবসা,ভূমি দখল,চুরি-ছিনতাই,ডাকাতি,হত্যাসহ বিভিন্ন সস্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চুরি,ছিনতাই,হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫টি মামলা রয়েছে।
র্যাব আরও জানিয়েছে,তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কম জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পথচারীদের জিম্মি করে নগদ অর্থ,মোবাইল,ল্যাপটপ, ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে এবং রাত গভীর হলেই বাসা বাড়ি,ফ্লাটে ও গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ডিআই/এসকে