ঢাকা, সোমবার, ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
মোরেলগঞ্জে ক্লাইমেট-স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্ধোধন
নাইক্ষ্যংছড়িতে ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ
কলাপাড়া স্কাউটস মাল্টিপারপাস ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত
বাহুবলে বিরতিহীন বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ
কোরবানির পশু জবাইয়ে ইমামদের প্রশিক্ষণ দেবে উত্তর সিটি
কোরবানির আগে ডিএনসিসির ফুটপাত মেরামতের নির্দেশ
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না’
মোহাম্মদপুরে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান:পাটালি গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ গ্রেফতার ৪৪
ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া স্থলবন্দর অচল অবস্থায়
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি সহ অন্য নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
মধুখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত যুবকের মৃত্যু
পরিচয় মিলেছে নড়াইলে রেললাইনের পাশে পড়ে থাকা রক্তাক্ত মরদেহটির
৩৪তম বিসিএস পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহী, সম্পাদক জুয়েল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল মেঘনা নদীর ভাঙনে দিশাহারা কয়েক’শ পরিবার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা পৌরসভায় সড়কে ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ

গণপূর্তের উচ্চমান সহকারীর এক দপ্তরেই ১৩ বছর পার, তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যে ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ!

চট্টগ্রাম গণপূর্ত অধিদপ্তর ডিভিশন-১ এর উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যে ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ের বেশ কিছু অভিযোগ আছে। এছাড়া এক দপ্তরেই খুঁটি গেঁড়ে বসে আছেন ১৩ বছর ধরে! ফলে গড়ে তুলেছেন একচ্ছত্র আধিপত্য।

২৭ বছরের চাকরি জীবনের ১৩ বছরই আছেন এক জায়গায়। ২৭ বছরের চাকরি জীবনে মাত্র দু’বার দপ্তর বদল হয়েছে তার। এভাবে এক জায়গায় দীর্ঘদিন থাকার সুবাদে নিজের বলয় তৈরি করেছেন তিনি। ঠিকাদার থেকে শুরু করে সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে তিনি আর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বনে গেছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ বিত্তের মালিক।

গণপূর্তের ওই কর্মচারীর নাম দেবাশীষ কুমার বৈদ্য। গণপূর্ত অধিদপ্তর ডিভিশন-১ চট্টগ্রামের উচ্চমান সহকারী তিনি। দেবাশীষ কুমার বৈদ্যর বাড়ী বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব শাকপুরা গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডে। থাকেন দেওয়ান বাজার দিদার মার্কেটস্থ গণপূর্তের সরকারি আবাসিক ভবনে।

অভিযোগ রয়েছে,বিভিন্ন সেবাপ্রার্থী ও ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়নসহ দপ্তরের বিভিন্ন ফাইলের জটিলতা তৈরি করে তাদের কাছ থেকে আদায় করেন টাকা। আর টাকা না দিলে তিনি ফাইল আটকে দেন।

সম্প্রতি এক ব্যক্তির কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কথাও বলেছেন তিনি। সেই কথোপকথনের অডিও বার্তা আমাদের হাতে সংরক্ষিত আছে।

ওই অডিওতে দেবাশীষ কুমার বৈদ্য বলেন,‘কেউ খুশি হয়ে ৪০০-৫০০ টাকা দিলে আমি নিই। আমি কারও কাছ থেকে খুঁজি না। ৯৫ পার্সেন্ট কাজ আমি টাকা ছাড়া করি।’ অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তি এই টাকা ঘুষ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আপনি যেটা মনে করেন।’

সূত্রে জানা যায়, এই অফিসের সকল অবৈধ লেনদেন তার মাধ্যমে হয়। তার একাধিক বাড়ি গাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। ভারতে ও তার বাড়ি আছে। এর মধ্যে স্ত্রীর অসুস্থতার অজুহাতে ছুটির পূর্ব অনুমোদন ব্যাতিত ভারতে গেছেন কয়েকবার।

জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের গণপূর্ত চট্টগ্রাম সার্কেলে অফিস সহকারী হিসেবে যোগ দেন দেবাশীষ কুমার বৈদ্য। ২০০৭ সালে উচ্চমান সহকারী হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। ২০১২ সাল গণপূর্ত অধিদপ্তরের ডিভিশন-২-এ কর্মরত ছিলেন। পরে ২০১২ সালে তিনি আসেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের ডিভিশন-১ এ। এখনও তিনি এই দপ্তরেই কর্মরত আছেন।

অথচ সরকারি চাকরি বিধিতে উল্লেখ আছে, প্রেষণের সময়কাল তিন বছর। ব্যতিক্রম ক্ষেত্র ছাড়া, চাকরির মেয়াদ তিন বছরের অধিক হবে না।

সরেজমিন চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের গণপূর্ত কার্যালয়ে গিয়ে একাধিক ঠিকাদারের কাছে দেবাশীষ কুমার বৈদ্যের সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, উচ্চমান সহকারীর টেবিলে ফাইল গেলে তাকে আর্থিক খুশি করতে হয়। না দিলে আটকে দেয়। এছাড়া ঠিকাদারি লাইসেন্সের নবায়নসহ বিভিন্ন কাজে তাকে টাকা দিয়ে খুশি করতে হয়।

এছাড়া উক্ত দপ্তরে আসা বিভিন্ন সেবা প্রার্থীরা তার বিরুদ্ধে নানান অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ করেছেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ডিভিশন-১ এর দপ্তরে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে দেবাশীষ কুমার বৈদ্য’র কাছে বেশ কয়েকবার তার মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাকে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়েও কোন সাড়া না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.কামরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও তার কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মন্ত্রণালয়ের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে,জানানো হয় অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আপনার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিতে দেখা হবে।

শেয়ার করুনঃ