
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়াম্যান জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে একাধিক দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বড়দিনের খাদ্যশস্য বিতরণে অনিয়ম, বরাদ্দ পাওয়া এক হাজার মেট্রিক টন চাউল ও গম বিতরণ না করে আত্মসাতের চেষ্টা, শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের নামে পরিষদ তহবিল থেকে ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেও বিতরণ না করা, উন্নয়ন প্রকল্পের জামানত থেকে উৎকোচের জন্য ফাইল আটকে রাখা, এবং পরিষদ সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে খেয়াল-খুশিমত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মত কার্যকলাপ করেছেন।
জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি নিজের দপ্তর ও হস্তান্তরিত ২৪ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে তুই-তারাক্কা ব্যবহার করেছেন। এছাড়া, সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে সরকারি অর্থ অপচয়, বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচীতে অসংগঠিত আচরণ, এবং স্বজাতপ্রীতি ও নিকটাত্মীয়দের পুনর্বাসন করার মতো বিষয়গুলোও উঠে এসেছে।
চেয়াম্যানের অদক্ষতায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ এখন হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন পরিষদের সদস্যরা। তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। একদিকে দুর্নীতির কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বাড়ছে, অন্যদিকে স্থানীয় জনগণও প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে।
জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে যখন দেশের আওয়ামী লীগ নেতাদের কপাল পুড়ছিল, তখন রাস্তার পাশে মোমবাতি বিক্রেতা অর্ধ-শিক্ষিত জিরুনা ত্রিপুরার ভাগ্য খুলে যায়।
৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়াম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, এবং ১০ নভেম্বর তিনি নতুন সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে তার দায়িত্বগ্রহণের পর থেকেই দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ উঠেছে, যা পরিষদের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
এখন স্থানীয় জনগণসহ পরিষদের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন, এবং আসন্ন নির্বাচনের পর পরিস্থিতি আরও খোলাসা হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।