নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের লংপুর গ্রামে একটি গভীর সেচ নলকূপের স্কীমের ১২০ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উক্ত নলক‚পের তিনটি ট্রান্সফর্মারের
ভিতরের সকল যন্ত্রাংশ এবং মোটর চুরি হয়ে যাওয়ায় দু-বছর যাবত বোরো আবাদ করতে পারছে না স্থানীয় কৃষকরা। এতে করে কোন উপায় না পেয়ে দিশেহারাগ্রস্থ তিনটি গ্রামের শতাধিক কৃষক-কৃষাণীর পরিবার। নতুন দাম দিয়ে তিনটি ট্রান্সফর্মার ক্রয় করার মতো সামর্থ্য নেই কৃষকদের। পানির অভাবে ধান চাষ বঞ্চিত
হলে না মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষকরা। সরজমিন পরির্দশনে জানাগেছে, লংপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চৌরাস্তা-কেন্দুয়া পাকা সড়কের পশ্চিমপার্শ্বে বিস্তর পতিত জমি। জমির মাঝখানে একটি গভীর নলকূপ থাকলেও তাতে বিদ্যূৎ সংযোগ নেই।নলকূপের কাছাকাছি খূঁটিতে তিনটি ট্রান্সফরমার ঝুলতে দেখা গেলেও ভেতর ফাঁকা। স্থানীয়রা জানান, এরশাদ সরকারের আমলে বসানো এ নলকূপের পানি দিয়েই লংপুর, চামারুল্লাহ বাহের বানাইল গ্রামের শতাধিক কৃষক তাঁদের প্রায় ১২ শত (১২০০০ শতক) কাঠা জমিতে বোরো ধান চাষ করে আসছিলেন। জমি উর্বর হওয়ায় এখানে ধানের ফলনও হত ভাল। কিন্তু ট্রান্সফর্মার চুরি হবার কারণে গত দুই মৌসুম তারা ধান চাষ করতে পারেননি। একই কারণে এবছরও চাষ করতে পারবেননা বলে অনিশ্চয়তায় ভোগছে তারা। সেখানে উপস্থিত কৃষক মোস্তফা, রাজিব মিয়া, আব্দুল কাদির, আকরাম হোসেন খান, মতিউর রহমান সহ আরও অনেকেই জানান, দুই মৌসুম ধরে তারা জমিতে ধানের আবাদ করতে পারছেননা। লংপুর গভীর নলকূপ
সমিতির সাবেক ম্যানেজার পল্লী চিকিৎসক মতিউর রহমান খান জানান, চার পাঁচ বছর পূর্বে চোরেরা নলকূপের তিনটি ট্রান্সফর্মার খুলে ভিতর থেকে সবকিছু নিয়ে যায়। এত টাকা দিয়ে বারংবার সমিতির সদস্য গরীব কৃষকদের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা। উক্ত গভীর নলকূপ সমিতির ম্যানেজার নজরুল ইসলাম ভূইয়া জানান, তিনি বেশ কয়েক বছর সভাপতি ছিলেন তা ঠিক, কিন্তু
প্রায় দু বছর পূর্বে মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। তারপরও সদস্যদেরকে যোগাযোগ করতে বলে দিয়েছিলেন। কেউ যোগাযোগ করেনি। নান্দাইল উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার আশরাফুল হক আকন্দ জানান, পূর্বে ট্রান্সফরমার কিনে দেবার মত ব্যবস্থা ছিল কিন্তু এখন সে ধরনের ব্যবস্থা নেই। তাই যা করতে হয় সমিতিকেই করতে হবে। নান্দাইল জোনাল বিদ্যুত অফিসের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, নিয়মানুযায়ী প্রথমবার ট্রান্সফর্মার চুরি হলে অর্ধেক দাম দিয়ে তা কিনে নিতে হয়। এরপর থেকে যতবার চুরি হবে ততবারই সমিতিকে সাকূল্য টাকা দিয়ে সেটি কিনে নিতে হবে।এ ছাড়া ট্রান্সফরমার সরবরাহের অন্য কোন ব্যবস্থা নেই। নান্দাইল উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফয়জুর রহমান জানান, বিষয়টি তার জানা ছিলনা, নলকূপ সমিতির ম্যানেজারকে তাঁর কাছে একটি আবেদন করার পরামর্শ দেন।