পঞ্চগড়ে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, কাম কম্পিউটার অপারেটর, আয়া, মালি, নাইট গার্ড, পিয়ন, ক্লিনার শূন্য পদ সমূহে নিয়োগের নামে চলছে রমরমা নিয়োগ বানিজ্য। নাম পরিচয় গোপন রাখার স্বঃর্তে ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, টাকা না পেলে কাগজে সাক্ষর করেন না দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা। আবার স্ব স্ব দপ্তর প্রধানদের প্রথম ঘন্টা নিজ দপ্তরে থাকার কথা থাকলেও টাকা পেলে সকাল নয়টার মধ্যে তারা নিয়োগ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু হয় ঘুষের বিনিময়ে। প্রায় দর কষাকষি করেই প্রার্থীদের মধ্য থেকে বেশী ঘুষ দেওয়া প্রার্থীকে যোগ্য মনে করেন নিয়োগ দাতাগণ। একই পদে সম পরিমাণ অর্থ দিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি দাতা বা দাতা সদস্যদের মাঝে মাঝে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আবার টাকা দিয়েও নিয়োগ পান না অনেকেই। অপরজন বেশি টাকা দিলে তাকেই নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ না পেয়ে ঘুষের টাকা ফেরত পেতেও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। অনেক সময় ঘুষ দিয়েও চাকুরি না পাওয়া প্রার্থীর পরিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়া, দ্বায়িত্ব পালনকারী নিয়োগের দ্বায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পালিয়ে যাওয়া, স্কুল মাঠে মানব বন্ধন, প্রধান শিক্ষকের আত্মগোপন, লোকদেখানো পরীক্ষা স্থগিত, লোক দেখানো প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সাময়িক সাসপেন্ড হর হামেশাই ঘটছে। প্রায় সময় নিয়োগ বানিজ্যে'র সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও উদ্ধতর্ন কর্মকর্তাদের তেমন কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে। দেখা গেছে জেলার প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় হাতে গোনা দু -চারটা পত্রিকায়। তারপর সেটা রাখা হয় গোপন। পূর্বের মনোনীত প্রার্থীর সাথে দু-তিনজন প্রোক্সি দিয়ে আবেদন করার পড় আবেদনের শেষ তারিখে সেটা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অনেক সময় অনেকেই আগে জানতে পেরে আবেদন করলে তখন শুরু হয় দর কষাকষি। পরে সরকারি ছুটির দিন অথবা অন্যান্য দিনে অফিস কার্যক্রমের নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সকালে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে দিনে পরীক্ষা হলেও গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় বহনকারী, যারা কখনো সংবাদ প্রকাশের সাথে জড়িত নয় তারা দ্বায়িত্ব নিয়ে সবকিছু গোপন রাখার চেষ্টা করে। দু-একজন এটা না মেনে সংবাদ প্রকাশ করতে গেলে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখা হয়। কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা রাজনৈতিক দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে স্থানীয় দলীয় পাতি-নেতাকর্মীদের পাহারায় রেখে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। স্থানীয়রা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানুষ তৈরি হয়। কিন্তু বাস্তবে এমন চিত্র শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিটি নিয়োগের বিষয়ে সবাই জানে ।
সংঘবদ্ধ নিয়োগ বানিজ্য মেনে নেওয়ার মত না। এর একটা সঠিক প্রতিকার চায় সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ সাইফুল মালেক বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তারা কিভাবে নিয়োগ দিবেন সেটা তাদের বিষয়। সবকিছু জানলেও অভিযোগ না পেলে কিছুই করার নেই। আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো।