
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে অস্ত্রের বাজার। সক্রিয় হতে শুরু করেছে অস্ত্র কেনাবেচা চক্র। তারা দেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কৌশলে অস্ত্র সরবরাহ করছে চক্রগুলো।
তেমনি ঢাকার পাশের জেলা মুন্সিগঞ্জ থেকে অভিনব কৌশলে বাংলা-ইংরেজি ডিকশনারীর পৃষ্ঠা কেটে অস্ত্র ও গুলির চালান সরবরাহের সময়ে হাতেনাতে চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-মো.বাবু শেখ (২৯), মো. দেলোয়ার হোসেন (৪০),মো. মামুন (২১) ও মো. রুহুল আমিন (২০)। তাদের সবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়।
গতকাল রবিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় দুটি পিস্তল, ১৩ রাউন্ড শটগানের কার্তুজ ও একটি টয়েটা এলিয়েন মডেলের প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
ডিবি বলছে, মুন্সিগঞ্জ কেন্দ্রিক এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র এনে সরবরাহ করত।
সোমবার ( ১৬ অক্টোবর ) দুপুরে অস্ত্র সরবরাহ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি প্রধান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি উত্তরা বিভাগ জানতে পারে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি প্রাইভেট কার দিয়ে অস্ত্র গুলিসহ মুন্সিগঞ্জ থেকে একটি চালান ঢাকায় আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে দিকে আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে শ্যামপুর থানার পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকায় তল্লাশী শুরু করে। এরই মধ্যে টয়োটা এলিয়েন (রেজি: নং-ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-৫১২৩) মডেলের একটি গাড়িকে থামার সংকেত দিলে চালক গাড়ী রেখে পালানোর চেষ্টা করলে চালকসহ গাড়ীতে থাকা চারজ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে একটি বাংলা-ইংরেজি ডিকশনারীর ভেতরে পৃষ্ঠা কেটে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ডিকশনারিতে অস্ত্র রাখার কৌশল সম্পর্কে ডিবি প্রধান বলেন, চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি পুরাতন বাংলা–ইংরেজি ডিকশিনারির২০৩ থেকে ৫৯০ নম্বর পৃষ্ঠার ভেতরে বিশেষ কায়দায় পিস্তল রাখা হয়। গাড়ির ভেতরে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ১৩ রাউন্ড শটগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, মুন্সিগঞ্জের কেন্দ্রিক এই চক্রের প্রধান আহমাদুল্লাহ ওরফে শুভেল। বর্তমানে পলাতক শুভেলের এর নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করত। বিশেষ করে দেশে নির্বাচন আসলে তারা সক্রিয় হতো। এরপর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করত। তারা অস্ত্র সংগ্রহের পর ক্রেতাদের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পাঠাত। এরপর কেউ অর্ডার করলে নিজেরাই সরবরাহ করত। এই ঘটনায় রাজধানীর শ্যামপুর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইমরান মোল্লা বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে আসলে চক্রের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
ডিআই/এসকে