ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
নবীগঞ্জে ভারি বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা: আতঙ্কে ১২টি পরিবার
কলাপাড়ায় জলবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৬০ পরিবার পেল ত্রান সহায়তা
পঞ্চগড়ে কাগজিয়াপাড়া গোরস্থান থেকে ৫ টি কঙ্কাল চুরি
বাগমারায় আসামি ছিনিয়ে হত্যা,মামলার প্রধান আসামি আত্রাই থেকে গ্রেপ্তার
পিরোজপুরে ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন
দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলা রক্ষা করে সকলকে অগ্রসর হতে হবে-ড.ওবায়দুল ইসলাম
কুড়িগ্রামে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে ২ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি
জাতীয় প্রাথমিক পদক প্রতিযোগিতায় দেশ সেরা হলেন কুড়িগ্রামের আব্দুল্লাহ রাদ বিন রাজু
সুন্দরবনে বনবিভাগের বিশেষ অভিযানে হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার
শেরপুরে কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শনে পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম
এনসিপি বোদা উপজেলা সমন্বয় কমিটি গঠিত
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন আফছার আলী
নাইক্ষ্যংছড়িতে চোরাকারবারির সাথে বিজিবির গোলাগুলিতে আহত-৪, হামলাকারী গ্রেফতার
চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ সভায় ডা. শাহাদাত হোসেন
লক্ষ্মীপুরে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালিত

রাজাপুরে বিদ্যালয়ে অনিয়মের খোঁজ নিতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে শিক্ষিকার দুর্ব্যবহার

মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ২৯ নং পূর্ব ফুলহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়মের খোঁজ নিতে গিয়ে সহকারী শিক্ষিকার খারাপ আচরণের শিকার হয়েছেন কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোসা. রেহেনা বেগম তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ভাষা ব্যবহার করেন এবং এক পর্যায়ে ক্যামেরা ভাঙারও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে চলমান বিভিন্ন অনিয়ম, শিক্ষিকার দায়িত্বে অবহেলা, এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে শিক্ষিকা রেহেনা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। তিনি শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে নিজের ইচ্ছেমতো স্কুলে আসা-যাওয়া করেন এবং নিয়মিত ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিকরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই সহকারী শিক্ষিকা মোসা. রেহেনা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি ক্যামেরা ধরার চেষ্টা করেন, সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন এবং বারবার প্রশ্ন করেন কেন তারা ‘অনুমতি ছাড়া’ বিদ্যালয়ে এসেছেন। সাংবাদিকরা পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করলেও শিক্ষিকার আচরণ আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে।

ঘটনার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মামুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন না। পরে তিনি এবং বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষিকাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি কারো কথা না শুনে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। প্রধান শিক্ষক বলেন, “ঘটনার কথা শুনে আমি দ্রুত বিদ্যালয়ে যাই এবং তাকে থামানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তিনি কারো কথাই শোনেননি। সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”

স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ, মোসা. রেহেনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন, সময়মতো ক্লাস নেন না এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন, শিক্ষিকার মারধরের কারণে তাদের সন্তানরা ভয় পেয়ে স্কুলে যেতে চায় না। সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গেও প্রায়ই তার বাকবিতণ্ডা হয়। এর আগে গত বুধবার এনটিভি অনলাইনের রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার প্রতিনিধি একটি বিদ্যালয়ে অনিয়ম নিয়ে লাইভ সম্প্রচার করায় তাকে রেহেনা বেগম হুমকি দেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোসা. রেহেনা বেগম বলেন, সাংবাদিকদের এরকম বিদ্যালয়ে এসে সংবাদ করা ঠিক না। অনিয়ম তো শুধু স্কুলে হয়না সব জায়গাতে হয়।

রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আকতার হোসেন বলেন, “এ ধরনের আচরণ একজন শিক্ষিকার পক্ষে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ প্রসঙ্গে রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আকতার হোসেন বলেন, “ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। একজন শিক্ষক হিসেবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

এলাকাবাসী এবং অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। তারা দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শেয়ার করুনঃ