ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালার কালো আইন বাতিলের দাবি
নারায়ণগঞ্জে কর ফাঁকি দিয়ে আসা ৫ কোটি মূল্যের ভারতীয় পণ্য জব্দ
কালীগঞ্জে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে চারা গাছ বিতরণ
লোহাগড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তেলনের দায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা
বরেন্দ্রের নতুন ভবনের অডিটরিয়াম মরহুম ড. আসাদুজ্জামানের নাম করনের দাবি বোর্ড সদস্য: হীরকের
তানোরে দেশি গরুতে জমে উঠেছে গ্রামাঞ্চলে পশুর হাট : অন্য বছরের তুলনায় দামও কম
রাজস্থলীতে বন্যহাতির তাণ্ডবে বসতবাড়ি লণ্ডভণ্ড,নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছে মানুষ
আত্রাইয়ে ৩৩ প্রতিবন্ধী পেলো সহায়ক উপকরণ
নান্দাইলে ২২ কেজি গাজা সহ দুই যুবক আটক
নির্ধারিত ভাড়া’র বেশি নেওয়া যাবে না: বিআরটিসি চেয়ারম্যান
মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ঈদুল আজহা
তানোরে নারীর উচ্ছিষ্ট চুলের ব্যবসায় হাজারো পরিবারের জীবিকা নির্বাহ চিন সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি
মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ১০ নং শংকরপুর ইউঃ বিএনপির সভাপতি ফয়জুরের সংবাদ সম্মেলন
ডিবির অভিযান: চাঁদপুর জেলা আ. লীগের সভাপতিসহ গ্রেফতার ৬
ঈদুল-আজহা উপলক্ষে দেশ ও প্রবাসের জনগণকে মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসাইনের শুভেচ্ছা

তুচ্ছ ঘটনায় ক্লাস চলাকালীন শিক্ষিকার উপর হামলা

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রেনীকক্ষে হামলা করে উম্মে কুলসুম (৫৫) নামে এক শিক্ষিকাকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে মুন্নি আক্তার (৩০) নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।

গত রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ১০৩ নং উত্তর ভূমখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার উম্মে কুলসুম ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা এবং একই গ্রামের মৃত আলী আহাম্মদ হাওলাদার এর স্ত্রী।

এঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষিকার মেয়ে হুমায়রা সাফা বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে হামলার ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পৃথক অভিযোগ দায়ের করছেন।

এদিকে হামলার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া সহ ভুক্তভোগী শিক্ষিকাকে হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি,বিঝারী ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহমেদ কাজী এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

জানাযায়,অভিযুক্ত মুন্নী আক্তার স্কুলের পাশে আওয়ামীলীগ নেতা আলী কাজীর একটি বিলাসবহুল বাড়িতে বসবাস করেন। আলী কাজীর প্রভাব দেখিয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যাবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তিনি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকার মেয়েকে জড়িয়ে এলাকায় আপত্তিকর কথাবার্তা ছড়াচ্ছিলেন। মুন্নী আক্তারকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলে গত শনিবার ওই শিক্ষিকার সঙ্গে মুন্নী আক্তারের বাকবিতন্ডা হয়। পরদিন বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর কক্ষে শিক্ষিকা উম্মে কুলসুমকে বেধরক মারধর করে মুন্নী আক্তার। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। হামলার পরে স্থানীয়রা অভিযুক্ত মুন্নীকে আটক করতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এর সহযোগীতায় ঘটনাস্থল থেকে সে পালিয়ে যায়।

এব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা উম্মে কুলসুম বলেন, ‘আমার মেয়েকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় আমি মুন্নীকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলি। কিন্তু সে আমার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষকের সহযোগীতায় স্কুলে প্রবেশ করে শ্রেনিকক্ষেই আমাকে মারধর করে। সে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত করে মেঝেতে ফেলে শ্বাসরোধে হত্যা চেষ্টা করে। সেদিন আমার ক্লাস ছিল প্রথম শ্রেনিতে কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমাকে জোর করে শিশু শ্রেনীতে পাঠান। আমাকে মারধর থেকে বাচাতে তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। উল্টো তিনি বলেন, একজন মহিলা আপনাকে মেরেছে এখানে আমার কি করার আছে। প্রধান শিক্ষক মারধর থেকে আমাকে না বাচিয়ে উল্টো হামলাকারীর পক্ষ নিয়েছেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযুক্ত মুন্নী আক্তার বলেন ‘উম্মে কুলসুম একটা খারাপ মানুষ। আমার সাথে খারাপ আচরন করেছে তাই মেরেছি।’ বিদ্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করে কেন হামলা করলেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ‘তাকে স্কুল ছাড়া কোথাও পাইনা, তাই ওখানেই মেরেছি।’

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন,‘সেদিন মুন্নী আক্তার স্কুলে এসে শিক্ষিকা উম্মে কুলসুম এর কথা জিজ্ঞাসা করলে আমি শিশু শ্রেনির কক্ষ দেখিয়ে দেই। সেখানে গিয়ে কুলসুমকে বেধড়ক মারধর করে। পরে আমি মুন্নীকে স্কুল থেকে বের করে দেই। দুজন মহিলা মারামারি করছে এখানে আমার কি করার আছে।’

তিনি আরও বলেন ‘আমার স্কুলের শিক্ষিকা কুলসুম অনেক খারাপ। তার অত্যাচারে আমি অতিষ্ট। আমি তার অনেক কিছু সহ্য করেছি।’

এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ নেতা আলী আহাম্মেদ কাজী বলেন,‘কুলসুম নামের ওই শিক্ষিকা আসলেই খারাপ। আপনারা খবর নিয়ে দেখেন। সে তার নিজের কারনেই মার খেয়েছে।’

এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত কিংবা হামলাকারীকে আটকের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিলেন না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘আমার মোবাইলে ব্যালেন্স ছিলোনা।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নড়িয়া-জাজিরা সার্কেল আহসান হাবিব বলেন,‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’

ডিআই/এসকে

শেয়ার করুনঃ