
কুড়িগ্রামের উলিপুরে কৃষ্ণমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে, অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন কলেজে অনুপস্থিতসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় ওই অধ্যক্ষকে অপসারণ করে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে একাধিক অভিযোগ এবং মানববন্ধন, নাগরিক সমাবেশসহ স্মারক লিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সলম্প্রতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল হাই সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পান। এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রদান করে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, ২০১৫ সালে মো. মাহমুদুল হাসান সরকার কৃষ্ণমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির পর সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ২০১৭ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। তবে চলতি বছরে মাত্র এক দিন কলেজে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর মাধ্যমে কৌশলে হাজিরা খাতা বাসায় নিয়ে হাজিরা করেন অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষের দীর্ঘ অনুপস্থিতির ফলে শিক্ষার নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে
ভুক্তভোগীরা জানান, অধ্যক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণে শ্রেণিকক্ষের ভগ্নদশা টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী ও রোদ-বৃষ্টিতে পাঠদান ব্যাহতসহ প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে জনবল নিয়োগের কথা বলে কমপক্ষে পাঁচজনের কাছে অর্থ গ্রহণ করেও নিয়োগ প্রদান করেন নাই বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর থেকে আর্থিক লেনদেন প্রমাণিত হওয়ায় চাকরি থেকে অপসারণের নির্দেশ প্রদান করা হলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেসব বিষয় ধামাচাপা দিয়েছেন। চাকরি দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের পুকুর ও দোকান লিজের টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম ও শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এত সব অনিয়মের পরও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। একবার তার বেতন বন্ধের সুপারিশ করা হলেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। এ জন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল হাই জানান তদন্ত করে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়েছে।