লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর বাসস্ট্যান্ডে গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও পথসভা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য কালে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদাক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনায় সৎ ও মেধাবী লোক চাই! দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় ময়দানে মুগ্ধ যেমন পানি নিয়ে সকলকে বলছিলেন পানি লাগবে পানি? অনুরূপ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে বলবেন সৎ লোক লাগবে, সৎ লোক? কারণ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা এদেশে বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছে। আর তার জন্য চাই সৎ ও মেধাবী নেতাকর্মী। আর তা একমাত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর-ই রয়েছে। আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়তে ভালোমানুষ লাগবে। যাঁরা অতীতে দেশে গুমখুন করেছে তাদেরকে আর সুযোগ দেওয়া হবে না। এখনো যাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের প্রতিহত করা হবে। এ বাংলার মাটিতে শেখ হাসিনাসহ তার সন্ত্রাসীদের বিচার করা হবে। তিনি আরও বলেন, জামায়াত ইসলামী তৈরি করে দেশের সূর্য সন্তান ছাত্রশিবির, আর আপনারা(আওয়ামীগ) তৈরি করেন সন্ত্রাসীদের গডফাদার। একের পর এক ব্যাংক ডাকাতি ও শেয়ার বাজার লুট করেছেন। গত ৫ আগষ্টের আগ মুহুর্তে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের ট্রাম্পকার্ড দিয়ে আমাদের আন্দোলন নস্যাৎ করতে চেয়েছেন কিন্তু পারেননি। এই দেশের ছাত্র-জনতা জামায়াত-শিবিরকে বুকে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে আপনাদের পতন নিশ্চিত করে ঘরে ফিরেন। এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় নেয়ামক শক্তি বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করলে আন্দোলন থেমে যাবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই আমাদেরকে সে দিন নিষিদ্ধ করে প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনা ঐ আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছেন। আর আপনি শুধু নিষিদ্ধ হন নাই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এসময় ঢাকা মহানগর উত্তরের জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, হাসিনা সরকার বিগত দিনে মানবাধিকার, ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র, অর্থনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সহ সকল কিছুই ধ্বংস করেছে। বৈষম্যহীন সমাজ কায়েমের জন্যই ছাত্রজনতা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করেছে। দেশ এখন আবার স্বাধীন হয়েছে। নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করায় দেশে কোন ধর্ম-বর্ণ ও রাজনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানবিক নেতা হয়ে প্রতিটি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়। কোন অন্যায় আর হতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ অপরাধ করার চেষ্টা করে, তাহলে যেখানে অপরাধ হবে, সেখানেই প্রতিটি দিনই বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার সেই ৫ আগষ্ট হবে। " এসময় উপস্থিত বক্তব্যকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যান্য নেতারা বলেন, জামায়াত - শিবিরের নেতাকর্মীরা বিগত দিনে থানা ও মন্দির পাহারা দিয়েছে। অথচ সেই থানার পুলিশরাই ইতিহাসের সবচেয়ে নির্মম নির্যাতন করেছে জামায়াত - শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর। শত অত্যাচার নিপিড়নের পরেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ার পরে যখন তারা সবচেয়ে অসহায় মানুষে পরিণত হয়েছে তখনও তাদের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় মানুষ যখন খাদ্যের জন্য হাহাকার করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির তখন নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে, রাতে ও দিনে না ঘুমিয়ে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী উপহার হিসেবে পৌঁছে দিয়েছেন। স্বৈরাচার, ভোটচোর সরকার ত্রাণ চুরির প্রতিযোগিতা করেছে আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ত্রাণ নয় বানভাসি মানুষের জন্য উপহার দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।"
এসময় উপস্থিত ছিলেন, রায়পুর উপজেলা জামায়তের আমীর সাইয়েদ নাজমুল হুদার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জামায়াতের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদাক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজাউল করিম, লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়া,জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর এ.আর. হাফিজ উল্লাহ, সেক্রেটারী নূরনবী ফারুক, রায়পুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এড. আব্দুল আউয়াল রাসেল চৌধুরী, পৌর জামায়াতের আমীর হাফেজ ফজলুল করিম, পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি এড. কামাল উদ্দিন সহ রায়পুর উপজেলার জামায়াতের সকল সহযোগী সদস্য, কর্মী, রোকন, সাধারণ জনগণ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।