ঢাকা, শনিবার, ৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে রোগীদের দূর্ভোগ
চিলমারীতে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমির স্নান সম্পন্ন
বিএনপি নেতার ওপর বোমা হামলার প্রতিবাদে কয়রায় বিক্ষোভ মিছিল
লঞ্চে মুমূর্ষ নবজাতককে মেডিকেল সহায়তা প্রদান করল কোস্ট গার্ড
আমতলীতে লঞ্চ ঘাট ও বাসস্ট্যান্ডে যৌথবাহিনীর অভিযান, জরিমানা আদায়
কালীগঞ্জে আমিনুর রহমান আমিনের গণসংযোগ শুভেচ্ছা বিনিময়
আমতলীতে হামলা, লুট ও পিটিয়ে দোকান দখলের অভিযোগ
দেওয়ানগঞ্জে মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ বাবা মৃত্যু
নড়াইল জেলা ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীদের ঈদ পুনর্মিলনী
জামায়াতে ইসলামীতে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসের কোনো সুযোগ নেই:রফিকুল ইসলাম
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করতে হবে
ভূরুঙ্গামারীতে মুভমেন্ট ফর পাঙ্কচুয়ালিটি’র সম্মেলনের উদ্বোধন
বিরামপুরে আগ্নিকান্ডে সনাতন পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই
কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে ডা. শহিদুল আলমের মতবিনিময়
পঞ্চগড় সড়কে বিআরটিএ ও যৌথবাহিনীর অভিযান

যেসব অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে তিন মামলা,কি আছে তাতে?

কথিত মানব সেবার অযুহাতে‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইচ কেয়ার’নামে প্রতিষ্ঠান খুলে ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িত মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। সবগুলো মামলায় রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি পুলিশ বাদী হয়ে,অন্য দু’টি দুইজন ভুক্তভোগী করেছেন। এতে প্রতারণা,মানবপাচার,নির্যাতন কয়েকটি অভিযোগ এনে দু‌টি মামলা হয়েছে। আর একটি পুলিশ বাদী মামলা হয়েছে।

এম রাকিব নামে একজন তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন,তিনি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শেরেবাংলা থানাধীন ভয়েজ স্কুল সংলগ্ন রাস্তার ফুটপাতে দুই বছরের শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তিনি মিল্টন সমাদ্দারকে ফোনে সেখানে ডেকে নেন। মিল্টন শিশুটিকে উদ্ধার করে তার প্রতিষ্ঠানে (চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইচ কেয়ার) নিয়ে যান। এদিন রাকিব তার সঙ্গে মিল্টনের প্রতিষ্ঠানে যান এবং দশ হাজার টাকা দেন। প্রায় শিশুটিকে রাকিব সেখানে দেখতে যেতেন। হঠাৎ পাঁচ-ছয় মাস পর মিল্টন তাকে ফোন করে হুমকি দেন এবং বলেন তিনি যেন শিশুটিতে দেখতে তার প্রতিষ্ঠানে না আসে। যদি আসেন তাহলে তার ক্ষতি করা হবে। পরের বছরের (২০২১ সাল) জুন মাসে ওই শিশুকে কোথাও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে খোঁজ পান রাকিব। সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হলে রাকিবের নজরে আসে এবং মিরপুর মডেল থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। এতে মিল্টন সমাদ্দারের নাম উল্লেখ করে তিনি অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করেছেন।

এদিকে মতিউর রহমান মল্লিক নামে তার মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন,তিনি ২০২১ সালের ৩ মার্চ মিরপুর-১ নম্বরের দক্ষিণ বিছিলের রাস্তায় একজন অন্ধ ব্যক্তি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে ওই ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য মিল্টনের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। পরের দিন তিনি জানতে পারেন ওই ব্যক্তিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তার সন্দেহ হলে তিনি ৪ মার্চ মিল্টনের প্রতিষ্ঠানে যান।

এসময় মিল্টন,তার স্ত্রীসহ অজ্ঞাত অনেকে মতিউর রহমান মল্লিককে মারধর করে আটকে রাখে। তিনি ঘটনার সময়ের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করলে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আর অন্ধ লোককে উদ্ধারের পর যে জিডি করেছিলেন সেটিও কেড়ে নেওয়া হয়। পরে অনেক সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর দিয়ে তিনি সেদিন ছাড়া পান।

গতকাল ডিবি পুলিশের অভিযানে কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা মিল্টন সমাদ্দার আটক হলে আজ বৃহস্পতিবার তিনি মিরপুর থানায় মামলা করেন।

এদিকে বুধবার ডিবি পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার মিল্টন সমাদ্দারে বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে। সেখানে নিজের বাবাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়েন মিল্টন। অভাব অনটনের সংসারে একসময় বরিশাল থেকে ঢাকায় এসে একটি দোকানে ওষুধ বিক্রি করতেন। সেখান থেকে তার উত্থান। অভিযোগ আছে কুড়িয়ে আনা সাধারণ মানুষের শরীরের কিডনি,বিভিন্ন অঙ্গ-পতঙ্গ বিক্রি করতেন। এছাড়া অসহায় মানুষকে লালন পালনের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সহায়তা পেতেন,যা দিয়ে তিনি বিলাসী জীবন-যাপন করতেন। কেউ তার এসব ঘটনার প্রকাশ করতে চাইলে টর্চার সেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার রাতে ডিবি পুলিশ মিল্টনকে আটক করে। পরে আজ তাকে পুলিশ বাদী মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। একইদিন দুপুরে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ জানান,রিমান্ডে নেওয়ার পর তার সব অপকর্ম তদন্ত করে বের করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন,মিল্টনকে রিমান্ডে নিয়ে তার স্ত্রীকেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর যদি কেউ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে তাহলে তার স্ত্রীকেও গ্রেফতার করা হবে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেগুলো মিল্টন অস্বীকার করতে পারেনি।

ডিআই/এসকে

শেয়ার করুনঃ