বিশেষ প্রতিবেদক;
এলজিইডির (আই ইউ আই জি ই পি) প্রকল্পের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিক লাল কুন্ড ও তার স্ত্রী স্বপ্না কুন্ড সরকারি অর্থ আত্মসাত করে দেশে বিদেশে অবৈধ সম্পদের মালিকানা বনে গেছেন।
এসব বিষয়ের তদন্ত চেয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ) দুর্নীতি দমন কমিশন সেগুনবাগিচা ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের কাছে কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অনিলচন্দ্র সরকার নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগপত্রে অনিলচন্দ্র সরকার বলেন, মানিক লাল কুন্ড, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা এলজিইডি, আগারগাও প্রধান কার্যালয় (আই ইউ আই জি ই পি) প্রকল্পে কর্মরত আছেন। তার পিতার নাম: শান্তি রঞ্জন কুন্ড, মাতার নাম-চপলা রানী কুন্ড, তার স্ত্রীর নাম স্বপ্না কুন্ড, মানিক লাল কুন্ড এর জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ১৯৭০২৬৯৫০৪৫৯০৩৬৯৪, জন্ম তারিখ: ২০/০২/১৯৭০ইং, তার টিআইএন নং- ৬৬০৫৬৩৯২৫৬২৯, কর সার্কেল-৮৮, কর অঞ্চল-০৪, ঢাকা। তার স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: কাউখালী বন্দর, ডাকঘর: মোহাম্মদপুর, উপজেলা: কাউখালী, জেলা: পিরোজপুর। তার স্বপ্ন কুন্ড জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৪১৮৩৬৪৪৭৫৮, জন্ম তারিখ: ০৯/০৮/১৯৮১ইং তার টিআই এন নং- ২৭২৬৮৮২৪৬৮৪৫, কর সার্কেল-১৪৭, কর অঞ্চল-০৭, ঢাকা। বর্তমান বাসা নং- ২/বি, গোল্ডেন রোড, ফ্ল্যাট নং- ৩/সি, রিং রোড, শ্যামলি ঢাকা। মানিক লাল কুন্ডের স্ত্রী স্বপ্না কুন্ড একজন গৃহীনি হওয়া সত্ত্বেও তার অবৈধ সম্পদের নমুনা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ (১) তার বর্তমান বসবাস রত বাসা নং- ২/বি, গোল্ডেন রোড, ফ্ল্যাট নং- ৩/সি, রিং রোড, শ্যামলি ঢাকা। উক্ত ফ্ল্যাটটি তিনি ৪০ লক্ষ ৪৪ হাজার ৩৭৫ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। (২) তার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। (৩) তার অন্যান্য বিনিয়োগ রয়েছে ১৮ লক্ষ ১ হাজার ৫৩৭ টাকা। (৪) তিনি সারে ১৫ ভরী স্বর্ণ দেখিয়েছেন। (৫) তিনি ফার্ণিচার ক্রয় দেখিয়েন ৫০ হাজার টাকা। (৬) ডিনি ব্যাংকে জমা দেখিয়েছেন ৭১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭২৫ টাকা। তিনি ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে নীট সম্পত্তি পরিমান প্রদর্শন করেছেন ১ কোটি ২৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৩৬ টাকা। স্বপ্ন কুন্ড একজন গৃহিনী হওয়া সত্ত্বেও তার স্বামীর অবৈধ টাকা মালিক তিনি নিজে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এছাড়াও মানিক লাল কুন্ড ঢাকা শহরে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট ও বাড়ী ক্রয় করেছেন। এছাড়াও তাদের অবৈধ সম্পদের বিবরনী কিছু তুলে ধরা হলো। (১) প্লট নং-৫৫, রোড-০৩, ব্লক-সি, পিয়াংকা সিটি, উত্তরা, ঢাকা উক্ত প্লটটি তিনি তার স্ত্রী ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। (২) বাসা নং-৩২, রোড-১০, সেক্টর-১৫, উত্তরা ঢাকা-১২৩০। উক্ত প্লটটি তিনি ১০ কোটি টাকা দিয়ে ক্রয় করে সেখানে ৮ম তলা ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন। (৩) বাসা-২৩, রোড-২১, উত্তরা, সেক্টর-১৬, ঢাকা। উক্ত বাসা তিনি ৪ কোটি ৯০ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। (৪) প্লট নং-৫২, রোড-০৮, ব্লক-সি, আনন্দ সিটি, উত্তরা, ঢাকা উক্ত প্লটটি তিনি তার স্ত্রী ৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। (৫) বাসা নং-৭৮, রোড-০২, সেক্টর-১৫, উত্তরা ঢাকা-১২৩০। উক্ত প্লটটি তিনি ১০ কোটি টাকা দিয়ে ক্রয় করে সেখানে ৮ম তলা ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন। (৬) বাসা-১৯৮ রোড-০৩, সেক্টর-১৪, উত্তরা ঢাকা-১২৩০। উক্ত বাড়িটি তিনি ৬ কোটি টাকা দিয়া ক্রয় করে সেখানে ৫ তলা ভবন নিমার্ণধীন। (৭) বাসা-৩৮, রোড-১১, সাভার পৌরসভা সংলগ্ন, জেলা-ঢাক। উক্ত বাড়ীটি তিনি ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়া ক্রয় করেছেন। (৮) বাসা-০২, রোড-০৮, আশুলিয়া অনিক প্লাজা সংলগ্ন। উক্ত বাসায় ২৮০০ স্কয়াফিটের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ৫ কোটি ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে। (৯) প্লট নং-২৩ রোড-০৬, ব্লক-ডি, বাড্ডা, ঢাকা উক্ত প্লটটি তিনি তার স্ত্রী ৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। (১০) প্লট-২৫, রোড-০২, মোহাম্মদিয়া হাউজিং, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। উক্ত বাড়িটি তিনি ৫ কোটি টাকা দিয়া ক্রনা করে ১০ম তলা ভবন নিমার্ণ করেছেন। (১১) বাসা-৫২ রোড-০১, গাজীপুর,। উক্ত বাড়ীটি তিনি ৫ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা দিয়া ক্রয় করেছেন। (১২) বাসা-৩২, রোড-৭, সেক্টর-১৩, উত্তরা, ঢাকা। উক্ত বাসায় ৩৫০০ স্কয়াফিটের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে। উল্লেখ্য যে মানিক লাল কুন্ড পিরোজপুরের ১৭ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত। তিনি তদবির করে ঐ এলাকায় এলাজিইডির প্রকল্পগুলোর কাজ না করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার তদবির করে দিয়ে নিজে ও কোটি কোটি টাকা ভাগভাটোয়ারা করে নিয়েছেন। মানিক লাল ও তার স্ত্রীর ভারতে বাড়ী গাড়ী ও কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। তারা আওয়ামীলীগের অর্থ যোগাদাতা। তাদের কাছে আওয়ামীলীগ সরকারের পিরোজপুরের কয়েকজন এমপির টাকা জমা রয়েছে। সেই টাকা তারা ভারতে পাচার করে দিয়ে সেখানে আওয়ামীলীগ সরকারের এমপিদের পূর্ণবাসন করার চেষ্টা করিতেছেন। তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে আরো অবৈধ অর্থের সন্ধান পাওয়া যাবে।
তদন্তপূর্বক প্রয়োজনী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন।