
গত ১০ অক্টোবর পদ্মাসেতুতে রেল যোগাযোগ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাণিজ্যিকভাবে আজ ১ নভেম্বর থেকে ট্রেন চলাচল করার ঘোষণা দেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়। ফলে আজ থেকে ট্রেনে যাত্রী নিয়ে পদ্মাসেতু পাড়ি দিচ্ছে ট্রেন। এর ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নতুন রেল যোগাযোগ স্থাপ হচ্ছে।
জানা গেছে, আজ বুধবার রাত পৌনে ১০টায় আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি খুলনা স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়বে। এর আগে রেলের তৈরি করা সময়সূচি অনুযায়ী, ভোর ৪টার পরপর ট্রেনটি পদ্মা সেতু অতিক্রম করবে। ঢাকায় পৌঁছানোর কথা বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি আবার ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বে। সাড়ে ৭ ঘন্টা পর অর্থাৎ বিকেল পৌনে ৪টার দিকে খুলনায় পৌঁছানোর কথা। শুরুতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটিও চলাচল করবে।
রেলওয়ে জানিয়েছে, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত এই রেল পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গা, ফরিদপুর শহর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ, চুয়াডাঙ্গা, যশোরসহ নয়টি স্টেশনে থামবে। বেনাপোল এক্সপ্রেসও একই পথ ধরে যাবে যশোরের বেনাপোল পর্যন্ত।
নতুন এই রেলপথের জন্য গত অক্টোবর মাসের মাসের শুরুতে ভাড়া ঠিক করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। তবে তা বাসের তুলনায় বেশি হওয়ায় সমালোচনা হয়। রেল কর্তৃপক্ষ ১১৫ টাকা ভাড়া কমিয়ে ৩৫০ টাকার ভাড়া ২৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। ফলে এখন ঢাকা থেকে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত শোভন শ্রেণির ভাড়া ধরা হয়েছে ১৯৫ টাকা, প্রথম শ্রেণির আসন ৩১০, প্রথম শ্রেণির বার্থের ভাড়া ৩৬৫, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) আসনের ভাড়া ৪৬৫ এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৬৯৫ টাকা।ঢাকা থেকে খুলনা পথে ৬১৫–এর জায়গায় ভাড়া ৫০০ টাকা, শোভন চেয়ারে ঢাকা থেকে যশোরের ভাড়া ছিল ৫৬৫, যা এখন ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে সরকার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। শুরুতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। বর্তমানে এই প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকায়। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুর সড়ক পথ চালু পর পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগের কাজ দ্রুত চলতে থাকে। পদ্মার দুই পারে যোগাযোগ স্থাপন করতে নেওয়া হয় আলাদা প্রকল্প ‘পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প’।
এখনো পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে রেলপথ নির্মাণে একটি প্রকল্প চলু রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ চালু হয়েছে। ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জ ও নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী জুনে চালু হওয়ার কথা। তখন আর রাজবাড়ী হয়ে খুলনায় যেতে হবে না। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দূরত্ব কমে যাবে।
প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে। এখন ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা এবং মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা নতুন করে রেল যোগাযোগের আওতায় এসেছে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নড়াইল জেলাও যুক্ত হবে।
ডিআই/এসকে