ঢাকা, শনিবার, ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
মিরসরাই সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ১ম ইফতার ও দোয়া মাহফিল
গর্জনিয়া ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কর্তৃক দোয়া ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন
হাতিরঝিলে ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ চারজন গ্রেফতার ,প্রাইভেটকার জব্দ
আশুগঞ্জে চোরাইভাবে আনা ভারতীয় বিভিন্ন রকমের ইনজেকশন ও প্রবক্সকারসহ আটক-০২
আমরা চাই ঢাকা হোক ‘ন্যায্যতার শহর’: পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটি সামিটে অংশ নিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক
প্যারিসে আয়োজিত পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটি সামিটে অংশ নিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক
জাতীয়তাবাদী দলের দুর্দিন, দুঃসময়ের নিবেদিত কর্মী ছিলেন সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিএনপি’র নেতা… শিমুল 
দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যুবকদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে:-আবু সুফিয়ান মুক্তার
ফুলবাড়ীতে থাউজেন্ট হসপিটালাস্ এর উদ্যোগে মাঝে ইফতার বিতরণ
গর্জনিয়া ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কর্তৃক দোয়া ও ইফতার মাহফিল
বাংলাদেশ স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে প্রয়োজন -ড. রেজাউল করিম
রূপসা উপজেলা প্রেসক্লাবে ইফতার ও দোয়া মাহফিল
গাইবান্ধায় এবি পার্টির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল
শংকরপুরে বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিল দূয়া আলোচনা সভা
সাম্য ও ভালোবাসার বার্তায় এডাস্ট বন্ধুসভার “সহমর্মিতার ঈদ” উদযাপন

নড়াইলে ‘ননী ‘ফল চাষে সফল রবিউল ইসলাম

নড়াইলে বানিজ্যিকভাবে ননী ফল চাষ করে সাড়া ফেলেছেন রবিউল ইসলাম (৪২)। প্রতিদিন দুর-দূরান্ত থেকে ফল ও চারা ক্রয় করতে রবিউলের বাগানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে যোগান সীমিত হওয়ায় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। এদিকে রবিউলের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নড়াইল কৃষি বিভাগ। সরেজমিন নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের ধাড়ীয়াঘাটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঔ গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম নিজ বাড়ির পাশের ১৫ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন মহৌষধি গুণসম্পন্ন ননী ফলের বাগান। এছাড়াও পাশের ২০ শতকের আরেকটি জমিতেও চলছে বাগান করার প্রস্তুতি। বর্তমানে অফ্রিকান, ইন্ডিয়ান ও মালয়েশিয়ান জাতের প্রায় দুই শত ননী ফল গাছে সমৃদ্ধ রবিউলের বাগান। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা ননী ফল। এছাড়াও তার কাছে ননীফল, করসলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছের কয়েক হাজার চারা রয়েছে। দামি এই ফল ও চারা কিনতে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত তার বাগানে ভিড় করছেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কুরিয়ারের মাধ্যমে চারা ও ফল পৌছে দিচ্ছেন রবিউল।

উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি এসিআই কৃষি প্রজেক্টে যশোরে চাকরি করেন। সেই সুবাধে দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষেক তিনি কৃষি বিষয়ে যুক্তি-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। একবার তিনি ভারতে গিয়ে ননী ফলের বিশাল বড় বড় প্রজেক্ট দেখেন এবং জানতে পারেন এটি ক্যান্সারের প্রতিষেধক। এরপর ২০২১ সালে ভারত থেকে চারা এনে বাগান গড়ে তোলেন। প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয় করে বাগানটি করার পর থেকেই ভালো সাড়া পেয়েছেন। ২০২২ সালে গাছ থেকে প্রথম ফল পান । সে বছর প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেন। এবছর ইতোমধ্যে ৫-৬ মণ ফল বিক্রি করছেন। এর আগে ৫-৬ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও বর্তমানে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। শীত মৌসুমে ফলের দাম আরো বাড়বে। তিনি আশা করছেন এবার প্রায় ৮-১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করবেন৷ এখন থেকে এ বাগানে আর খরচ নেই। শুধু সার-ওষুধে হয়তো হাজার দুয়েক টাকা খরচ হবে বছরে। তাছাড়া আর এক টাকাও বিনিয়োগ করা লাগবে না। ২০ বছর পর্যন্ত আর কোন বিনিয়োগ ছাড়াই ইনকাম করতে পারবেন৷ এ বছর ৮-১০ লাখ টাকা আয় হলে সামনে বছর ১৫ লাখ টাকা হবে। গাছ যত বৃদ্ধি পাবে, ফলও বাড়বে৷ ফলের দামও বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, তার বাগানে থাকা আফ্রিকান ননী ফলটা ক্যান্সারের মহৌষধ। ভারতীয়টা ব্যাথা এবং রুচি বাড়াতে সক্ষম। আর মালয়েশিয়ানটাও ক্যান্সারে কাজ করে তবে এর ফলের সাইজ কিছুটা ছোট।

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশের যে কোন প্রান্তে যে কেউ হোক না কেন যদি আমার সাথে যোগাযোগ করে, অবশ্যই তাকে উদ্বুদ্ধ করব। তারা যাতে লাভবান হয় সেজন্য সহযোগিতা করব। এটা তো একটা ব্যবসা। মানুষের উপকার হবে, ব্যবসাও হবে। ক্যান্সারের কোন ওষুধ বাংলাদেশে ছিলো না। এই ওষুধ খেয়ে তাদের ওখানের শত শত রোগী ভালো হয়েছে। তাছাড়াও অনান্য চাষাবাদে তেমন লাভ নেই। কিন্ত এই ননী ফল চাষে বর্তমান প্রচুর লাভ। এদিকে রবিউলের বাগানের ননী ফল কিনতে আসা পার্শ্ববর্তী মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শরশুনা গ্রামের তৈয়ব আলী বলেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত তার এক আত্মীয় বেশ ভালো হয়ে গেছে এই ফল খেয়ে। তাই তিনিও ফল কিনতে এসেছেন। আল্লাহ যদি ভালো করেন, তাহলে ভালো হবেন। আল-আমিন নামে এক যুবক বলেন, তার ছোট বোনোর ক্যান্সার হয়েছিল। ঢাকা নিয়ে গেলে সেখান থেকে ফেরত দেন। পরে এখান থেকে ননী ফল ও করসলের পাতা নিয়ে খাওয়ার পর অনেকটা সুস্থ হয়েছে। নড়াইল শহরের আলাদাতপুর থেকে আসা মো: ইরব মোল্যা বলেন, এখানে অনেক ঔষধি গাছ আছে শুনে এসেছেন। তার একজন রোগী আছে তার জন্য গাছ, পাতা ও ফল নিবেন।

তিনি এসে দেখেন আরো অনেক লোকজন আসছেন ঔষধি গাছ ও ফল নিতে। মাইজপাড়া ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শোভন সরদার বলেন, বানিজ্যিকভাবে নড়াইলে এখানেই প্রথম ননী ফলের চাষ হচ্ছে। এই গাছের চারা একবার রোপণের পর ২০ বছর ফল পাওয়া যায়। এটা অত্যন্ত লাভজনক। রবিউলের বাগানের প্রচার করছেন তারা। এতে অনেকেই সাড়া দিচ্ছে। নতুন উদ্যেক্তাদের সার্বিকভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

শেয়ার করুনঃ