সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানার কর্নসূতি এলাকার মো.লাল চাঁদ (৩০)’কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মো.নীরব (২৪)’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৩)।

গত সোমবার ( ২৫ মার্চ) বিকালে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

র‍্যাব জানান,গত ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাধীন কর্নসূতি এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মো.লাল চাঁদ’কে কুপিয়ে নৃসংশভাবে হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

লে. কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান,গ্রেফতারকৃত আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, সে এবং ভিকটিম লাল চাঁদ একই এলাকায় বসবাস করে আসছিল। ঘটনার বেশকিছুদিন পূর্বে থেকে ভিকটিম লাল চাঁদ এর সাথে ধৃত আসামীর পরিবারের জমিজমা সংক্রান্ত শত্রুতা গড়ে ওঠে। শত্রুতার জের ধরে লাল চাঁদকে উচিত শিক্ষা দেবে বলে গ্রেফতারকৃত নীরব পরিকল্পনা করতে থাকে। তার পরিকল্পনা মোতাবেক গত ( ১৫ মে) ২০১৭ তারিখ সন্ধ্যায় নীরব এবং তার সাথে আরও কয়েকজন সহযোগী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লাল চাঁদ এর বাড়িতে গিয়ে কৌশলে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শাহবাজপুর এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে নীরব এবং লাল চাঁদ এর সাথে কথা কাটাকাটি চলতে থাকে।

তিনি জানান,কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নীরব উত্তেজিত হয়ে ভিকটিম লাল চাঁদকে আঘাত করে। পরবর্তীতে নীরব এবং তার সহযোগীরা মিলে তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে লাল চাঁদকে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে। লাল চাঁদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসার বিষয়টি তার বাবা জানতে পারায় তাকে খুঁজতে খুঁজতে শাহবাজপুরের দিকে যায়।

তিনি আরও জানান,ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে গ্রেফতারকৃত নীরব এবং তার সহযোগীরা ভিকটিম লাল চাঁদকে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করছে। লাল চাঁদকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার বাবা চিৎকার করতে থাকে। তার ডাকচিৎকার শুনে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতারকৃত নীরব এবং তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। তৎক্ষনাৎ স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল থেকে লাল চাঁদকে গুরুতর জখম অবস্থায় সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাল চাঁদকে রাত ২১৪০ ঘটিকায় মৃত ঘোষনা করেন।

লাল চাঁদ এর মৃত্যুর পরে তার বাবা বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ৮/১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামীকে করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

গ্রেফতারকৃত নীরব হত্যাকান্ডের পর থেকে নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকা জেলার কাশিমপুর এলাকায় আত্মগোপনে থাকতে শুরু করে। নীরব এলাকা থেকে পালিয়ে ঢাকা জেলার কাশিমপুর এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী হিসাবে কাজ শুরু করে। উক্ত মামলায় অন্যান্য পলাতক সকল আসামিদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিআই/এসকে