
রাজধানী যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর,ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জাল টাকার নোট প্রস্তুত ও সরবরাহের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
র্যাব বলছে, চক্রটি জাল নোটের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
গ্রেফতারকৃতের নাম- জিসান হোসেন রিফাত (১৯)।
গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় দুই লাখ ৩০ হাজার ৯০০ টাকার বিভিন্ন মূল্যমানের জাল নোট ও জাল টাকার নোট তৈরিতে ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে র্যাব-১০ এর সিপিসি-১ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার সোহেল বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে জাল টাকা প্রস্তুতকারী জিসানকে গ্রেফতার করা হয়।
অল্প সময়ে বেশি টাকা আয়ের লোভে উচ্চাভিলাষী জিসান ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে একটি চক্রের কাছ থেকে জাল টাকার নোট তৈরির প্রশিক্ষণ নেয়। এরপর নিজেই জাল নোট তৈরি করে পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সরবরাহ করে আসছিলো।
জিসানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কোম্পানি কমান্ডার সোহেল বলেন, জাল টাকা তৈরির সার্বিক দক্ষতা অর্জন করা পরে জাল টাকা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি কেনে। নিজের তৈরিকৃত জাল টাকা সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেইজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হয়। একটি সংঘবদ্ধ চক্র টেলিগ্রাম এ্যাপস ব্যাবহার করে জাল টাকা তৈরীর প্রযুক্তি আদান প্রদান করত। জাল টাকা বিক্রির পন্থা বলে দিত চক্রের সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খুলে জাল নোট বিক্রি করত। ফেইসবুক গ্রুপে জাল টাকা বিক্রির পোস্ট দিত এরপর কেউ আগ্রহী হয়ে কমেন্ট করলে তাদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে চ্যাটিং এর মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতো।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরিকৃত জাল নোট সরবরাহ করত। সে প্রতি এক টাকা মূল্যের জাল নোট ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। জাল টাকা সরবরাহকারী চক্রটি মাছ বাজার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করে আসছিল।
জিসান অধিক জন-সমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানীর পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমান জাল নোট ছাপিয়ে মজুদ করত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জালনোট প্রিন্টিং এর সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয় ফেলত। সে এখন পর্যন্ত দুই কোটি টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে পুলিশ র্যাবকে জানিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
ডিআই/এসকে