কয়রায় কপোতাক্ষ নদের বেড়ীবাঁধে ভাঙন: আতঙ্কে এলাকাবাসী

12

কয়রা (খুলনা)প্রতিনিধিঃ 

সুন্দরবন সংলগ্ন সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। খুলনার কয়রা উপজেলার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধের ১৩-১৪/২ নম্বর পোল্ডারে ২ নং কয়রা গ্রামের কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের ২০০ মিটার অংশ ধ্বসে পড়ে। ইতোপূর্বে ভাঙন রোধে পাঁচ শতাধিক জিও ব্যাগ ও বড় বড় মাটির খণ্ড নিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়।
ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে বাঁধ সংলগ্ন ২ নম্বর কয়রা, গোবরা, ঘাটাখালী, হরিণখোলা, মদিনাবাদ গ্রাম সহ কয়রা উপজেলা সদরের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এ ছাড়া ভাঙন রোধে অবিলম্বে পাউবোর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে প্রায় দুই হাজার একর আমনের ক্ষেতসহ অসংখ্য মৎস্য ঘের নদের লবনাক্ত পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ধ্বসে যাওয়া স্থানে সংস্কারের চেষ্টা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ পাশ থেকে মাটি কেটে ধ্বসে যাওয়া স্থানে ফেলছেন; আবার কেউ বাঁধের ঢাল থেকে জিও ব্যাগ তুলে ধ্বসে যাওয়া বাঁধের স্থানে দিচ্ছেন।
২ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দা আবু মুসা ও আসলাম হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাত্র দুই বছর আগে এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। অথচ এরই মধ্যে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তারা আরও বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় উপরে এবং বাঁধের দুই পাশে মাটি দেওয়া হলেও ভিতরে বালু দেওয়া হয়। এ কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে ধ্বসে গেছে।
কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম শেখ বলেন, এর আগে ঘূর্ণিঝড়, আম্পানের প্রভাবে বাঁধের ঐ স্থান ভেঙে গিয়েছিল। সে সময় পাউবো ঐ বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়। তবে সঠিক তদারকি না থাকায় কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অপরিকল্পিতভাবে বাঁধটি মেরামত করে। এ কারণে দুই বছর না যেতেই বাঁধটি ভাঙনের শঙ্কার মুখে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভাঙন কবলিত স্থানে নদের পানিতে ঘূর্ণমান প্রবাহ দেখা যাচ্ছে। এতে বাঁধের নিচের অংশের মাটি দ্রুত সরে যাচ্ছে। বাঁধ যাতে না ভাঙে, সে জন্য নদের তীরে পাকা ব্লক দেওয়া দরকার।
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাঙন কবলিত স্থানে গিয়েছিলাম। বিষয়টি পাউবোর কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় প্রাথমিক ভাবে পানি ঠেকাতে পারলেও ভাঙন রোধে দ্রুত পাউবোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় নদের তীরবর্তী জনপদের বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে।
খুলনা পাউবোর উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী মুহম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, কয়রার এসব বেড়িবাঁধ এতদিন সাতক্ষীরা জেলার আওতাধীন ছিল। দুই বছর আগে ২ নম্বর কয়রা এলাকার বেড়ি বাঁধটি জাইকার অর্থায়নে সাতক্ষীরা পাউবো নির্মাণ করেছিল। আমরা খুলনা পাউবো সম্প্রতি দায়িত্ব পেয়েছি। তবে প্রশাসনিক জটিলতা এখনো কাটেনি। আমি আজ ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে যাচ্ছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন কবলিত ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।