রৌমারীতে উন্নয়নের নামে চলছে রমরমা বালু ব্যবসা

12

শৌখিন মিয়া, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: 

রৌমারীতে হাইকোর্টের নির্দেশনা সত্ত্বেও ফসলি জমি কেটে অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না। এ উপজেলায় একশ্রেণির প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী ব্রহ্মপুত্র, সোনাভরি, জিঞ্জিরাম, ধরণী, হলিহলিয়া কালাপানি প্রভৃতি নদ-নদীর তীর কেটে ব্যবসা করছে। এস্কেভেটর দিয়ে বালু কাটার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকার বসতবাড়ি, আবাদি জমি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। অন্যদিকে নদ-নদীর বামতীরে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) চলমান প্রকল্পগুলোর উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাখিউড়া সোনাভরি নদীর ব্রিজ, তুরা রোডের নতুনবন্দর ব্রিজ, ইজলামারী ব্রিজ, রাবারড্যাম, ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বপাড় বেড়িবাঁধ, চরশৌলমারী, বন্দবেড়, রৌমারী ও যাদুরচর ইউনিয়নের খেরুয়ারচর, ঘুঘুমারী, খেদাইমারী, বলদমারা, বাগুয়ারচর, পশ্চিম খনজনমারা, ফলুয়ারচর, পালেরচর, কুটিরচর, বাঘমারা, মিয়ারচর মুখতলা, দিগলাপাড়া, ধনারচর, বকবান্দা, খেওয়ারচর, শ্মশানঘাট, চরনতুনবন্দর, ঝাউবাড়ি. চরফুলবাড়ি, দিগলাপাড়া, ধনারচর পশ্চিমপাড়া, আলগারচর, বাগেরহাটসহ ২৮টি গ্রামের প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বসতবাড়ি। তাদের ফসলি জমি হারানোর আশঙ্কায়ও রয়েছে। 

এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জমি ও বাড়ির মালিকগণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় বিভিন্ন নদীর চর জমি মালিকের কাছ থেকে প্রতি বর্গফুট ১৬ টাকা হিসেবে ক্রয় করেন বালু ব্যবসায়ীরা। পরে ড্রেজার বা এস্কেভেটর দিয়ে কেটে ট্রাক্টরযোগে পরিবহন করেন। ড্রেজার মেশিন যে স্থানে বসানো হয় সেখানে বিশাল এলাকাজুড়ে ৫০-৭০ ফুট পর্যন্ত গভীর খাদের সৃষ্টি করে তারা। কিছুদিন পর বন্যার পানির স্রোতে ওই স্থানের আশপাশের ফসলি জমি ও বাড়িভিটা পানির নিচে দেবে যায়।

জমি ও বসতবাড়ির মালিকরা অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনে বাধা দিলে বালু ব্যবসায়ী চক্রটি তাদের উপর হামলা করেন। এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়ায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায় না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাঝে মধ্যে তদন্ত করতে গিয়ে মেশিনের ২-৪টি পাইপ বা কয়েক হাজার টাকা ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করলেও পরের দিন থেকে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠে ড্রেজার মালিকপক্ষ ।