
খাইরুল ইসলাম মুন্না বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে নোটিশ না দিয়ে একটি পরিবারকে বসত ঘর ভেঙে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে। ঘরের জব্দ করা মালামাল ইউপি সদস্যর কাছে জমা জমা রাখা হয়েছে।
দুপুরে উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের ওয়াকফ এস্টেটের জমিতে ঘর উত্তোলণ করে বসবাসকারী একটি পরিবারকে বসত ঘর ভেঙে উচ্ছেদ করা হয়। প্রশাসনের দাবি বরগুনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অনুযায়ী উচ্ছেদ মামলায় অবৈধভাবে বসবাসকারী হিসেবে ওই পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর আগে পরিবারটিকে একাধিকবার উচ্ছেদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিষ্ট্রেট আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের সহায়তায় দুপুর ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রস্থের ঐ জায়গা থেকে বিবিচিনি ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত আ: করিমের ছেলে সোলায়মান হাওলাদারের পরিবারের বসতঘর ভেঙে ফেলেছে। এ সময় উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও ভারপ্রাপ্ত কানুনগো রিয়াজ মাহামুদ,ইউনিয়ন উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তা আবুল বাসার, রিয়াজুল ইসলাম ও বেতাগী থানার পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিবিচিনি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: শাহাবুদ্দিন জসিম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরের জব্দ করা মালামালের মধ্যে ১ টি কাঠের চৌকি, প্লাস্টিকের ড্রাম, পিতলের কলসী, ১ বস্তা কাপড়, তিন বান্ডিল পুরানো টিন ও গৃহাস্থলির মালামাল আমার জিম্মায় রাখা হয়েছে এবং সে গুলো আমি ইউপি পরিষদে জমা করে রেখেছি।
ওই জমিতে ২০ বছর আগে ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলেন সেফালি বেগম (৫০)। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ প্রশাসনের লোকজন পুলিশ লইয়া আমগো ঘর ভাঙা শুরু হরে। বর্ষর সময় এহন আমরা কোথায় থাকমু?’
বসতকারী সোলায়মান হাওলাদার (৬০) অভিযোগ করেন, ১৯২৮ ইংরেজি সাল থেকে সেখানে বসবাসকরে আসছিলাম। আমাদের কোন নেটিশ দেওয়া হয়নি। পরিকল্পিতভাবে নোটিশ ধামাচাপা রেখে উচ্ছেদের রায় এনে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন থাকার বিকল্প জায়গা না থাকায় আমরা চরম অসহায়াত্বের মধ্যে পড়েছি।
সোলায়মান হাওলাদার ও তার পরিবারের এ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঐ ওয়াকফ এস্টেটের মোতয়াল্লী আনসার আলী হাওলাদার বলেন, তার বাড়ি নদীর ওপার। তিনি ওই জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদার হিসাবে ছিলেন। তাই আইন্নুগভাবে এস্টেটের অবৈধ দখল মুক্ত করা হয়েছে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সুহৃদ সালেহীন জানান, বরগুনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অনুযায়ী অবৈধভাবে বসবাসকারী হিসেবে উচ্ছেদ মামলায় ওই পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।