
সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করায় রাজশাহীর বাঘা এলাকার মাংস ব্যবসায়ী মামুন হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা জড়িত ঘাতক আরেক মাংস ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মাদারীপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৫ ও র্যাব-৮।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি)রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
কমান্ডার মঈন বলেন,ভুক্তভোগী মামুন ও গ্রেফতার মিজান এক সময় একসঙ্গে মাংসের ব্যবসা করতেন। তাঁরা পরস্পরের আত্মীয় হন। গত ডিসেম্বর মাসে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর অভিযান শুরু করলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি শুরু করেন মামুন। কিন্তু মিজান সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে মাংস বিক্রি করতেন। এ কারণে মিজানের দোকানে মাংস বিক্রি কম হতো। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
মঈন বলেন,এই ঘটনার জেরে গত ২০ জানুয়ারি সকলে রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানী হাটে ন্যায্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় মাংস ব্যবসায়ী মামুনকে মাংস কাটার ছুড়ি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে অপর একজন মাংস খোকন।
পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় মানুনের ছোট ভাই বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর গ্রেফতার এড়াতে খোকন পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে স্থায়ীভাবে আত্মগোপনের জন্য মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় তার এক বন্ধুর মাধ্যমে ড্রেজার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকে। শিবচর গতকাল(রবিবার) র্যাব তাকে গ্রেফতার করে। খোকন র্যাবের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার মঈন বলেন,খোকন মাংস ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে খোকনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাঘা থানায় মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটি মামলা আছেন। এসব মামলায় সে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে। হত্যাকারী খোকন ও ভুক্তভোগী মামুন নিকত আত্মীয়। একই জায়গায় তারা দীর্ঘদিন এক সঙ্গে মাংস ব্যাবসা করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। মামুন সরকার নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। এতে তার দোকানে মাংস বিক্রির পরিমান বেড়ে যায় এবং খোকনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমান কমে যায়।এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে খোকন মামুনকে হত্যা করে। এই ঘটনায় খোকনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
ডিআই/এসকে