
পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালনা জলসা’কে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে -২৩ টি। যৌথ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন -১৯০ জন।
উল্লেখ্য গত (৩,৪,৫- মার্চ) পঞ্চগড় আহমদ নগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালনা জলসা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যার প্রতিবাদে সম্মিলিত খতমে নবুয়্যত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড় তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করে। যার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার(২-মার্চ) দুপুরের পর দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখে মুসল্লিরা।
পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সালনা জলসার বিষয়ে সম্মিলিত খতমে নবুয়্যত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড় এর নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে। পরদিন শুক্রবার (৩-মার্চ) জুম্মার নামাজের পর মুসল্লিরা পুনরায় তীব্র আন্দোলন শুরু করে।
এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তারা সংঘর্ষে জরিয়ে পরে। এতে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ১জন ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ জন নিহত হয়। সে দিন ট্রাফিক পুলিশের অফিস, একটি বক্স, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় পুলিশ, র্র্যাব, বিজিবি, সাংবাদিক ও আন্দোলন কারী সহ অনেকেই আহত হয়।
পরদিন শনিবার (৪-মার্চ) সন্ধ্যার পর সুপরিকল্পিত ভাবে পুনরায় নাশকতা সৃষ্টি হয়। এ সময় একটি র্র্যাবের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ সহ প্রশাসনের অনেকেই আহত হয়। পুরো ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে -২৩ টি। তার মধ্যে পঞ্চগড় সদর থানায় ১৮ টি । বোদা থানায় ৫ টি। মোট গ্রেফতারের সংখ্যা ১৯০ জন।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দল গুলো একে অপরকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করলেও বিএনপি ও জামায়াত সদস্যদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে দ্বাবী বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের। অনেকেই দাবি জানিয়েছেন, ঘটনা ঘটার কয়েকদিন আগে পঞ্চগড় জালাসি মোরে সম্মিলিত খতমে নবুয়্যত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড় এর আয়োজনে যে সভা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে আহমদিয়া সম্প্রদায় (কাদিয়ানি) দের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য উস্কানি দেওয়া হয়। যার ফলে পর্যায়ক্রমে ঘটনাগুলো ঘটে ।
সহিংসতায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) দের ১৯০ টি বাড়ি ও ১৮ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বোলে নিশ্চিত করেছেন তাদের সম্প্রদায়ের নেতারা। এর মধ্যে পুলিশ সুপার পঞ্চগড় এস এম সিরাজুল হুদা পিপিএম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, যারা এই নাশকতা করেছে তারা সবাই প্রশিক্ষিত।
পুরো ঘটনাটি সু-পরিকল্পিত। এদিকে পঞ্চগড় সদর থানার সামনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের আহাজারি ক্রমশ বাড়ছে। দেখতে গেলেই পুলিশ গ্রেপ্তার করছে মর্মে সমগ্র জেলায় একটি বাক্যে ছড়িয়েছে।
যোদিও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে, ভিডিও ফুটেজ, সিসি টিভি ফুটেজ, গোয়েন্দা রিপোর্ট ও সঠিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নিরপরাধ সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জেলার সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে তারা অন্যায় করেছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হোক এটা আমরাও চাই।
তবে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত ক্ষোভের জন্য কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন সাজা না পায় সেজন্য সরকার ও প্রশাসনের উদ্ধতর্ন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন অনেকেই।