এমবিবিএস পরীক্ষা প্রশ্ন দেওয়ার নামে প্রতারণা করেন আনিস

17

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চলমান এমবিবিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সক্ষমতা না থাকলেও পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন সরবরাহের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)’র গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃতর নাম- এস এম আনিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের মনিপুরীপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে চলতি বছরের এমবিবিএস পরীক্ষার প্রবেশ পত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের শতাধিক চেক, পুলিশ কনস্টেবল পরীক্ষা প্রবেশ পত্র, বিভিন্ন লিখিত ও অলিখিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ধরনের সিল। একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার ( ১০ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি জানান, আনিস এসএসসি পাস করে কিছুদিন পিপলস জুট মিলে কাজ করত। পরবর্তীতে বিভিন্ন কাপড়ের কারখানায় কাজ করেছে। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল থেকে ফার্মগেট গ্রীন রোড এলাকায় ছাত্র-ছাত্রীর হোস্টেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি ফরম কেনাবেচা শুরু করে। এখান থেকেই পরিচিত হয় নিজ এডুকেশন’ নামের কনসালটেন্সি ফার্মের স্বত্বাধিকারী পরিচয় দেওয়া জাহিদের সঙ্গে। সে আনিসকেওফ্রেন্ডস এডমিশন কনসালটেন্ট’ একটি নিজস্ব কনসালটেন্সি ফার্ম খুলে দেয়। সিটি কর্পোরেশন থেকে মুদি দোকানের ব্যবসার লাইসেন্স নিয়ে সে শুরু করে দেয় দেশি এবং সার্কভুক্ত বিদেশী ছাত্রছাত্রীদেরকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি বাণিজ্য।
এই কাজের জন্য সে নিজের প্যাডে বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদেরকে সিট সংরক্ষণের জন্য চিঠি লিখত। পাশাপাশি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের লোকদেরকে এবং মন্ত্রণালয়ের দু-এক জন অসাধু ও অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে দিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের নামে ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদেরকে প্রতারণা করত।
রিটায়ার্ড করা কর্মকর্তা – কর্মচারী এবং কোচিং সেন্টারের কাদের সাথে মিলে সে এই অপকর্মটি করে আসছিল সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

গোয়েন্দা প্রধান আরও জানান, মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছাড়াও বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় দালালি অথবা প্রতারণা বাণিজ্য করে সে ইতোমধ্যে দুইটি হোটেল এবং মনিপুরী পাড়ায় একটা বিলাসবহুল ফ্লাট এর মালিক হয়েছে আনিস। চলমান এমবিবিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সক্ষমতা তার ছিল না কিন্তু এই পরীক্ষার নামে বিস্তর প্রতারণার জাল সে বিভিন্ন মাধ্যমে বিস্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

ডিআই/এসকে