
শ্রীবাস সরকার, মাধবপুর প্রতিনিধি ঃ
মাত্র একটি মোবাইল ফোনের জন্য ৭ বছরের এক শিশুকে খুন করেছে কিছু পাষন্ড, ঘটনার ২দিন পর পুকুরে মিলল শিশুর মৃত দেহ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে।
সরেজমিনে জানা যায়,
গত ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ রোজ মঙ্গলবার বিকেল প্রায় ৩ টার সময় সদর ইউনিয়নের কুলিকুন্ডা গ্রামের প্রবাসী মোঃ আব্দুল হাই ভূইয়ার ছেলে রনি ওরফে ছোটন ১ম শ্রেণীর ছাত্র।
তার হাতে পরিবারের একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ছিল। মোবাইলে এমবি দেয়ার কথা বলে প্রতিবেশি শাহ আলমের ছেলে রিফাত, ও তার দুই বন্ধু লিটন আর ইয়াছিন মিলে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী দাঁতমন্ডল গ্রামের ওরসে নিয়ে যায়।
সন্ধ্যা অনুমান ৫ টার দিকে রনির বোন রনির হাতে থাকা মোবাইলে ফোন দিলে রিফাত ফোনটি রিসিভ করে। রনির বোনের কন্ঠ বুঝতে পেরে রিফাত ফোনটি বন্ধ করে দেয় । ওই ঘটনায় রনির মা সুলেমা বেগম বাদী হয়ে নাসিরনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন, যার ডাইরী নং- ৩৩।
এর পর স্থানীয় জনতা রিফাত কে আটক করে রনি কোথায় জানতে চাইলে রিফাত একেক সময় একেক রকমের উত্তর দেন।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত স্বীকার করে তার দুই বন্ধু লিটন ও ইয়াছিন মিলে রনিকে মেরে নূরপুর গ্রামের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল হক এর পুকুরে ডুবিয়ে রেখেছে।
২ মার্চ বেলা ২ টার দিকে এস আই আরিফুর রহমান সরকার, এস আই আমিনুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নূরপুরের পশ্চিমে এবং কুলিকুন্ডার পূর্বপাশে অবস্থিত আহসানুল হক মাষ্টারের পুকুর থেকে হাত বাধা অবস্থায় রনির অর্ধগলিত লাশ উদ্বার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় লাশ থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।
এ সময় রনির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে তার মা,বোন, আত্মীয় সজন সহ বাড়ির লোকজনের কান্নায় আকাশ- বাতাস ভারী হয়ে উঠছে, বার বার অজ্ঞান হয়ে পরেছেন রনির মা আর বোন। কোথায় সেই আদরের শিশু সন্তান । মায়ের কান্নার শব্দ শুনতে পায় না আদরের ধন। মা ও আদরের সন্তানের মা ডাক শুনতে পায় না। সারা পৃথিবীতে যেন হাহাকার আর আর্তনাদের গন্ধ।
স্থানিয় ইউপি সদস্য মোঃ মোখলেছুর রহমান ভূইয়া জানান, গত রাত থেকে রিফাত একেক সময় একেক রকমের কথা বলছে, রিফাতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে তার মা বাবা গতকাল সন্ধার পর থেকেই ঘর তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। রিফাতের মা বাবা কোথায়? জানতে চাইলে রিফাতের চাচী বলেন গতকাল থেকেই তারা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার সাংবাদিকদের জানান রিফাত ও লিটনকে আটক করা হয়েছে, ইয়াছিন পালিয়ে গেছে তাকেও আটকের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন রনি হত্যার পেছনে আরো কোন রহস্য রয়েছে কি না তা খোঁজে দেখা হচ্ছে।