পলাতক যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামান গ্রেফতার

14

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক জন পলাতক যুদ্ধাপরাধী‌কে গ্রেফতার ক‌রে‌ছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গ্রেফতারকৃতর নাম- হলেন মো. ফখরুজ্জামান (৬৬)। মঙ্গলবার রা‌তে রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ান এলাকা থেকে তা‌কে গ্রেফতার করা হয়। ফখরুজ্জামান নানা কৌশলে গ্রেফতার এড়িয়ে ছিলেন।

এটিইউ’র পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মোহাম্মদ আসলাম খান ব‌লেন, ২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক এম এ হান্নানের নির্দেশে পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে ও মো. ফখরুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিচারক মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে সেটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইবুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল বাংলাদেশ-১, মিস কেস নং-১১/২০১৫, ধারা-৩, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩ মূলে পরোয়ানা জারি করলে হান্নানকে গুলশানের বাড়ি এবং ছেলে রফিক সাজ্জাদকে গুলশান এলাকায় তার অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় অপর আসামী মো. ফখরুজ্জামান ও ছাব্বির পলাতক ছিলেন।

২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইবুনালের প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল

করেন। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনাল অভিযোগ গঠন করেন। তার মধ্যে আসামী জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাত ও মিজানুর রহমান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ ২০/০২/২০২৩ খ্রি. সোমবার ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে হিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও

লাশ গুমের অপরাধে মো. ফখরুজ্জমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে অন্যান্য আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদ- সাজা প্রদান করেন।

গ্রেফতার যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামানকে ময়মনসিংহের কোতয়ালি মডেল থানা পু‌লি‌শের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ব‌লে জানান এ‌টিইউ’র পুলিশ সুপার।

ডিআই/এসকে